শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০
তারাবী নামাজে তাড়াহুড়ো করার বিধান কি?
জওয়াব : তারাবির নামাজ আদায়ে অতি মাত্রায় তাড়াহুড়ো করা এবং তারাবির নামাজ আদায়ে অবহেলা করা একটি শরিয়ত পরিপন্থী কাজ। যেমন, মুরগির ঠোকর দেয়ার মত করে নামাজ আদায় করা এবং তারাবির নামাজে কোরান খতম করার উদ্দেশ্যে তাড়াতাড়ি কিরাত পড়া। শেখ জামাল উদ্দিন আল কাসেমি রহ. বলেন, মনে রাখতে হবে, তারাবির নামাজ রমজান মাসে অবশ্যই সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, অধিকাংশ মসজিদের ইমামদের দেখা যায়, তারা তাদের মসজিদ সমূহে তারাবির নামাজ তাড়াহুড়ো করে তারাবির নামাজ আদায় করতে অভ্যস্ত। ফলে তারা নামাজের আরকান সুন্নাত ইত্যাদি আদায়ে অবহেলা করে। নামাজ তাড়াহুড়ো করে শেষ করার প্রবণতায় তারা রুকু সেজদা আদায়ে ধীরস্থিরতা ছেড়ে দেয়, কিরাত পড়তে তাড়াহুড়ো করে এবং কোরানের আয়াতের শব্দগুলোকে পরিবর্তন করে ফেলে। রএ ধরনের নামাজ এবং নেক আমল দ্বারা শয়তান ঈমানদারদের ধোঁকা দেয়া ও তাদের বোকা বানানোর চক্রান্ত। শয়তান তাদের আমল করা সত্ত্বেও আমলটিকে নষ্ট করে দেয় এবং যারা এ ধরনের তাড়াহুড়োর অনুকরণ করে, তাদের নামাজ অনেক সময় ইবাদতের পরিবর্তে তা হাসি ঠাট্টায় পরিণত হয়। তাই আমরা বলি, একজন মুসলি¬র উপর কর্তব্য হল, সে তার নামাজের বাহ্যিক যেমন: কিরাত, দাঁড়ানো, রুকু-সেজদা ইত্যাদি এবং আধ্যাত্মিক যেমন: একাগ্রতা, অন্তরের উপস্থিতি, পরিপূর্ণ ইখলাস, কিরাত এবং নামাজের তাসবিহ ইত্যাদির অর্থের মধ্যে চিন্তা ফিকির করা। নামাজের বাহ্যিক সৌন্দর্য হল, মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত আর নামাজের বাতিনি সৌন্দর্য,সৌন্দর্য নামাজির অন্তর বা আত্মার সাথে সম্পৃক্ত। ইমাম গাজালি রহ. বলেন, যে ব্যক্তি নামাজের বাহ্যিক দিকটি লক্ষ্য রাখেন কিন্তু আধ্যাত্মিকতার প্রতি তেমন কোন গুরুত্ব দেন না, তার একটি দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মত যে কোন একজন বাদশাকে একটি মৃত ছাগলের বাচ্চা উপহার দিল আর যে ব্যক্তি নামাজের জাহেরি কাজ গুলোতে শৈথিল্য প্রদর্শন করে তার দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে, কোন বাদশাকে একটি কান কাটা, উভয় চক্ষু নষ্ট এমন একটি জন্তু হাদিয়া দিলেন। মনে রাখতে হবে, এখানে এ দুই জন লোকই একজন বাদশা মানহানি করেছে এবং বাদশার মর্যাদাকে খাট করেছে। তবে উভয় ব্যক্তির অপরাধ অবশ্যই এক রকম নয়, ফলে তাদের উভয়ের শাস্তি ও এক রকম হবে না। তার পর ইমাম গাজ্জালি রহ. বলেন নিশ্চয় তুমি তোমার প্রভুকে তোমার নামাজ হাদিয়া দিচ্ছ, তোমাকে অবশ্যই এ ধরনের নামাজ হা দিয়া দেয়ার থেকে বিরত থাকতে হবে ,যে নামাজ দ্বারা তোমাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। শেখ উসাইমিন রহ. রাসূল সা. এর কিয়ামুল¬াইল এবং তার সাহাবিদের কিয়ামুল¬াইলের আলোচনা করতে গিয়ে এক জায়গায় বলেন : বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ যেভাবে তারাবির নামাজ আদায় করেন তা সম্পূর্ণ শরিয়তের পরিপন্থী, তারা তারাবির নামাজ এত দ্রুত আদায় করে, নামাজের ওয়াজিব, নামাজে ধীরস্থিরতা এবং শান্তি সৃষ্ট তা বজায় ইত্যাদিতর প্রতি কোন গুরুত্ব প্রদান তারা করে না, অথচ এ গুলো নামাজের রুকন,যে গুলো আদায় ব্যতীত নামাজ শুদ্ধই হয় না। তারা তাদের পিছনের নামাজি- অসুস্থ, রুগি, দুর্বল এবং বৃদ্ধদের শুধু শুধু কষ্ট দেয় এবং তারা নিজেদের উপর অত্যাচার করে এবং অন্যদের উপরও অত্যাচার করে। বিজ্ঞ আলেমগন বলেন, একজন ইমামের জন্য এত তাড়াহুড়ো করা, যাতে তার পিছনে নামাজিরা সুন্নাত আদায় করতে পারে না, তাহলে তার নামাজ অবশ্যই মাকরূহ হবে। আর যদি ইমাম এমন তাড়াহুড়ো করে যার ফলে নামাজিরা তার পিছনে ফরজ আদায় করতেও সক্ষম হয় না, তার পরিণতি কি হতে পারে ? আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন। শেখ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব রহ. কে তারাবির নামাজে তাড়াহুড়ো প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, তিনি প্রশ্ন কারিকে বলেন - তোমার কথা ইমাম তাড়াতাড়ি করলে তার পিছনে অনেক মানুষ নামাজ আদায় করবে আর যখন সে ধীরস্থির ভাবে নামাজ আদায় করে তখন তার পিছনে নামাজির সংখ্যা কমে যাবে- এর আলোকে আমি বলব, শয়তানের উদ্দেশ্য হল মানুষকে নেক আমল হতে বিরত রাখা, আর শয়তান যখন তা করতে সক্ষম হয়ে উঠে না, তখন তার জীবন মরণ চেষ্টা থাকে মানুষের আমলকে নষ্ট করা। দু:খের বিষয় হল, আমাদের দেশের অধিকাংশ ইমামরা তারাবির নামাজে এমন সব কাজ করে যা অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না। তারা অর্থহীন নামাজ আদায় করে, তারা ঠিক মত রুকু করে না এবং ঠিক মত সেজদা করে না। অথচ ঠিক মত রুকু-সেজদা না করলে নামাজই শুদ্ধ হয় না। মনে রাখতে হবে,মূলত: নামাজের উদ্দেশ্যই হল একাগ্রচিত্তে আল¬াহর সম্মুখে বিনয় ও নম্রতার সাথে দন্ডায়মান হওয়া এবং কোরান তেলাওয়াতে চলাকালে তা হতে উপদেশ গ্রহণ করা। কিন্তু নামাজের এ মহৎ উদ্দেশ্য তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করলে তা পূরণ হয় না। সুতরাং ইমামের সাথে তাড়াহুড়ো করে বিশ রাকাত আদায় করার চেয়ে ধীরস্থির খুশু ও বিনয়ের সাথে ইমামের পিছনে দশ রাকাত পড়াই উত্তম। রাকাতের আধিক্যের চেয়ে সুন্দরভাবে নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হও;আর ইহাই তোমার জন্য উপকারী ও সর্বোত্তম। আমরা যে কথাগুলো আলোচনা করলাম, এর উপরই আমল করা উচিত। আর যদি ইমাম ও মোক্তাদির মাঝে এ নিয়ে মতভেদ দেখা দেয় এবং মোক্তাদিরা তাড়াহুড়ো নামাজে অভ্যস্ত এবং তারা যদি ইমাম এর সাথে সুন্নাত অনুযায়ী নামাজ আদায় করতে অসম্মতি জানান তখনও ইমামের জন্য করণীয় হল, সে ধীরস্থির নামাজ আদায়ে উৎসাহী হবে এবং কোন ভাবেই নামাজে এমন তাড়াহুড়ো করবে না যাতে ধীরস্থিরতার বিঘ্ন হয়। এ সকল ক্ষেত্রে ইমাম সাহেবের জন্য নামাজে পূর্ণ রুকু সেজদা এবং ধীরস্থিরতা বজায় রেখে তাড়া হুড়া করে দীর্ঘ লম্বা কিরাত পড়ার চেয়ে ছোট কিরাত পড়া উত্তম। অনুরূপ ভাবে দীর্ঘ কিরাত এবং রুকু সেজদায় ধীরস্থিরতা বজায় রেখে, দশ রাকাত নামাজ আদায় করা তাড়াহুড়ো করে বিশ রাকাত নামাজ আদায় করার তুলনায় উত্তম। কারণ, নামাজের আসল এবং চালিকা শক্তিই হল মানুষের মন আল¬াহর দিক ধাবিত হওয়া। অনেক সময় আছে তখন কম বেশির চেয়ে উত্তম হয়ে থাকে। কিতাবুস্সুনান ওয়াল মুবতাদিয়াত গ্রন্থকার বলেন,অনেক ইমামের নামাজ পাগলের নামাজের সাদৃশ্য। বিশেষ করে তারাবির নামাজ তিনি বলেন তাদের দেখা যায় তারা বিশ মিনিটে তেইশ রাকাত নামাজ আদায় করেন এবং প্রত্যেক রাকাতে তা সুরা আলা, দোহা এবং সুরা রহমানের এক চতুর্থাংশ পড়ে নামাজ শেষ করেন। এ ধরনের নামাজ সকলের ঐক্য মতের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ বাতিল, কারণ তাদের নামাজ হল মুনাফেকদের নামাজ সমতুল্য। আল্লাহ মুনাফেকদের নামাজ সম্পর্ক বলেন: و إذا قاموا إلى الصلاة قاموا كسالى يراءون الناس ولا يذكرون الله إلا قليلا. এবং যখন তারা নামাজে দন্ডায়মান হয় তখন তারা অলসতা করে । তারা লোক দেখানো নামাজ আদায় করে। এবং তারা খুব কমই আল¬াহকে স্মরণ করে। তাদের নামাজ সফল মুমিনরেদর নামাজের মত নয় যাদের নামাজ সম্পর্কে আল¬াহ বলেন: قد أفلح المؤمنون الذين هم في صلاتهم خاشعون. অবশ্যই ঐ সকল ঈমানদাররা সফল কাম যার তাদের নামাজে বিনয়ী। এবং তাদের নামাজ রাসূল সা. যে ধরনের নামাজ আদায় হতে বারণ এবং নিন্দা করেছেন -কাকের ঠোকর, নামাজে চুরি ইত্যাদি-সে নামাজের মতই নয়। আল্লামা দারমি আবুল আলিয়া হতে বর্ণনা করেন, আমরা বিভিন্ন লোকের নিকট হতে ইলম অর্জন করার জন্য উপস্থিত হতাম, তখন আমরা তার নামাজের প্রতি লক্ষ্য করতাম, যখন দেখতাম তার নামাজ সুন্দর,আমরা বলতাম তার অন্য সব কিছুই সুন্দর। আর যখন দেখতে পেতাম তার নামাজ অসুন্দর, আমরা তার থেকে দুরে সরে যেতাম এবং বলতাম তার অন্য সব কিছুই এর চেয়েও বেশি অসুন্দর।
শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০
যেভাবে 'তারাবী' এলো...
রোজার সঙ্গে সঙ্গে যে ইবাদতের নাম সর্বাগ্রে আসে তা হলো তারাবির নামাজ। ‘তারাবি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ বিশ্রাম বা আরাম। তারাবির নামাজ মূলত তাহাজ্জুদ নামাজেরই আরেকটি নাম। কিন্তু রমজান মাসে সর্বসাধারণ যেন এ থেকে কল্যাণকামী হতে পারে তাই রাতের প্রথম ভাগে অর্থাৎ এশার নামাজের পরপরই এ নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তারাবির নামাজ সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, “একদিন গভীর রাতে মহানবি (সা.) মসজিদে গেলেন এবং নামাজ পড়লেন। কিছু লোকও নবিজীর পেছনে তখন নামাজ পড়লেন। ভোর হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করায় দ্বিতীয় রাতে লোকসংখ্যা আরও বেড়ে গেল এবং তারা মহানবির (সা.) সঙ্গে নামাজ পড়ল। সেদিন ভোর হওয়ার পর লোকদের মধ্যে আরও বেশি আলোচনা হলো এবং তৃতীয় রাতে মসজিদের লোক সমাগম আরও বেশি হলো। মহানবি (সা.) বাইরে বের হয়ে নামাজ পড়লেন আর তারাও নবিজীর সঙ্গে নামাজ পড়লেন। যখন চতুর্থ রাত এলো তখন এত লোক সমাগম হলো যে, মসজিদে স্থান সংকুলান হলো না। কিন্তু তিনি এ রাতে তারাবির নামাজের জন্য বের হলেন না। ভোর হলে ফজরের নামাজের জন্য বের হলেন এবং ফজরের নামাজ শেষে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাশাউদ পাঠের পর বললেন- তোমাদের বিষয়টি আমার কাছে গোপন ছিল না। কিন্তু আমি আশঙ্কা করছিলাম, এ নামাজ না আবার তোমাদের ওপর ফরজ করে দেওয়া হয়। আর তোমরা তা পালনে ব্যর্থ হও। মহানবি (সা.) ইন্তেকাল করলেন এবং এ নামাজের বিষয়টি তেমনই রইল”। (বুখারি)।
মহানবি (সা.) নিজে তারাবি নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ আছে, মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ আদায় করে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়’। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ)। হযরত আমর বিন মুররাহ আল-জুহানী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- “কুযাআ’হ গোত্রের এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল- হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি এই মর্মে সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া (ইবাদতের উপযুক্ত) কোনো উপাস্য নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসুল, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি, রমজান মাসের সিয়াম পালন করি, তারাবিহ সালাত আদায় করি ও জাকাত প্রদান করি, তাহলে আমার ব্যাপারে আপনার মতামত কি? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- ‘যে ব্যক্তি এর উপর মৃত্যুবরণ করবে সে সত্যবাদী ও শহীদদের মধ্যে গণ্য হবে”। (ইবনে খুযায়মা, ইবনে হিব্বান, তারগীব)
আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসা পেতে হলে নফল ইবাদত একান্ত প্রয়োজন। আমরা যেন পবিত্র এই রমজানে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি অনেক বেশি নফল ইবাদত করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০
পবিত্র মাহে রমজান শুরু 25 এপ্রিল.
২০২০ সালের রমজানের প্রথম রোজা হবে ২৫ এপ্রিল। ২৪ এপ্রিল (শুক্রবার) রমজানের চাঁদ দেখা যাবে। ইসলামের রীতি অনুযায়ী চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল আরবি মাস। চাঁদ দেখার মাধ্যমেই সারাবিশ্বের মুসলিমরা মাসব্যাপী রোজা পালন করেন। আকাশ গবেষক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যাই বলুক না কেন, মুসলিম বিশ্ব চাঁদ দেখেই পালন করবেন পবিত্র রমজান মাসের রোজা। এটাই ইসলামের নীতি।এমন খবর জানিয়েছে জিওনিউজ।
যেহেতু রমজানের রোজা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। শাবান মাসের ২৯ তারিখ (২৪ এপ্রিল) যদি রমজানের চাঁদ দেখা যায় তবে ২৪ তারিখ তারাবিহ পড়ে ভোর রাতে সেহরি খেতে হবে। ২৫ এপ্রিল হবে রমজানের প্রথম রোজা। শাবান ৩০ দিন পূর্ণ হলে সে হিসেবে রমজানের প্রথম রোজা হবে ২৬ এপ্রিল।
এদিকে এ বছর বাংলাদেশে আরবি ১৪৪১ হিজরি সনের সপ্তম মাস রজব ৩০ দিন পূর্ণ হয়েছিল। সৌদি আরবে রজব মাস ছিল ২৯ দিনে। শাবন মাসে এসে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধান দুদিনে এসে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, মুসলিম উম্মাহর কাছে রমজান মাস ও রোজা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাবান। সব মুসলিমই জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণার চেয়ে খালি চোখে চাঁদ দেখে রোজা পালন করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যদিও বিগত কয়েক বছর ধরে রোজা ও রমজানের তারিখ প্রযুক্তির কল্যাণে খালি চোখে চাঁদ দেখার আগেই নির্ধারণ হয়ে যায়।
বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
📿🤲🏾📿আল কুরআনের আলো📿🤲🏾📿
وَجَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ الْجِنَّ وَخَلَقَهُمْ وَخَرَقُوا لَهُ بَنِينَ وَبَنَاتٍ بِغَيْرِ عِلْمٍ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٠٠﴾ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ أَنَّى يَكُونُ لَهُ وَلَدٌ وَلَمْ تَكُنْ لَهُ صَاحِبَةٌ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ﴿١٠١﴾
তারা জ্বিনকে আল্লাহর অংশী স্থাপন করে, অথচ তিনিই ওদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং ওরা অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহর প্রতি পুত্র-কন্যা আরোপ করে। তিনি মহিমার্নিত এবং ওরা যা বলে, তিনি তার ঊর্ধ্বে। তিনি আকাশমন্ডলী ও ভূমন্ডলের উদ্ভাবনকর্তা, তাঁর সন্তান হবে কিরূপে? তাঁর তো কোন স্ত্রী নেই, তিনিই তো সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন(১) এবং প্রত্যেক বস্তু সম্বন্ধে তিনিই সবিশেষ অবহিত। -সূরা আল-আন'আম (আয়াত-১০০-১০১)।
(১) অর্থাৎ, যেমন আল্লাহ তাআলা এই সমস্ত জিনিসকে সৃষ্টি করার ব্যাপারে এক ও একক, তাঁর কোন শরীক নেই, অনুরূপ তিনিই এই যোগ্যতার দাবী রাখেন যে, একমাত্র কেবল তাঁরই ইবাদত করা হোক। তাঁর ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক স্থির করা না হোক। কিন্তু মানুষ এই একক সত্তাকে বাদ দিয়ে জ্বিনদেরকে তাঁর শরীক বানিয়ে নিয়েছে। অথচ তারাও আল্লাহ কর্তৃক সৃষ্ট। মুশরিকরা তো মূর্তির অথবা কবরে সমাধিস্থ ব্যক্তিবর্গের পূজা করত। কিন্তু এখানে বলা হয়েছে যে, তারা জ্বিনদেরকে আল্লাহর শরীক বানিয়ে রেখেছে। আসলে ব্যাপার হল, এখানে জ্বিনদের বলতে শয়তানদেরকে বুঝানো হয়েছে এবং শয়তানদের কথা অনুযায়ীই শিরক করা হয়, তাই প্রকৃতপক্ষে পূজা ও উপাসনা শয়তানেরই করা হয়। এই বিষয়টাকে কুরআন কারীমের বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, সূরা নিসার ১১৭নং, সূরা মারয়্যামের ৪৪ নং, সূরা ইয়াসীনের ৬০ নং এবং সূরা সাবা’র ৪১ নং আয়াতে। (তাফসীরে আহসানুল বায়ান)
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যসমূহ (Atom)



