সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮

পবিত্র কাবা শরিফ সম্পর্কে এই ১০টি অজানা তথ্য প্রতিটি মুসলমানের জানা অপরিহার্য!

পবিত্র কাবা শরিফ সম্পর্কে এই ১০টি অজানা তথ্য

প্রতিটি মুসলমানের জানা অপরিহার্য- পবিত্র কাবা।

আল্লাহর ঘর। প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়রাজ্যে বাস

করে বাইতুল্লাহ জিয়ারতের স্বপ্ন। কাবার পরিচিতি

বিশ্বজোড়া। কিন্তু এই কাবাঘর সম্পর্কিত এমন

কিছু তথ্য রয়েছে যা অনেকই জানেন না। কাবা

শরিফ সম্পর্কে অজানা ১০টি তথ্য নিয়ে

আমাদের আজকের আয়োজন।

১. কাবা ঘর কয়েকবার নির্মিত হয়েছে: নানা

ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধাবস্থার কারণে

কাবা ঘর কয়েকবার নির্মাণ করা হয়েছে। অধিকাংশ

ঐতিহাসিকের মতে কাবা শরিফ মোট ১২ বার

নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান ডিজাইনের নির্মাতা

মুসলিম শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। হাজ্জাজ বিন

ইউসুফ নিজে এই ডিজাইনটি করেননি।

বরং তিনিও ইসলাম পূর্ববর্তী কুরাইশদের ডিজাইন

অনুসরণ করেছেন। পরবর্তী সময়ে বেশ

কয়েকবার কাবা শরিফের সংস্কারের কাজ করা

হলেও মূল ডিজাইনে কোনো পরিবর্তন করা

হয়নি। সর্বশেষ কাবা শরিফের সংস্কার কাজ করা

হয় ১৯৯৬ সালে। তখন বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি

ব্যবহার করে কাবা শরিফের দেয়াল ও

প্রাঙ্গনকে দৃঢ় ও মজবুত করা হয়।

২. কাবার গিলাফের রং পরিবর্তন: কাবা শরীফকে

গিলাফে আবৃত করার প্রচলন শুরু হয় প্রাচীন

জুরহুম গোত্রের মাধ্যমে। পরবর্তী

সময়ে এ ধারা চলমান থাকে। মহানবি (সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাবা ঘরকে একটি সাদা

ইয়েমেনি চাদরে আবৃত করেন। পরবর্তী

খলিফারা কাবা ঘরের গিলাফের ক্ষেত্রে সাদা, লাল

এবং সবুজ রং ব্যবহার করেছেন। আব্বাসি খলিফারা

কালো গিলাফের প্রচলন করেন। এখনো তা

সেই কালো রংয়েই বহাল আছে।

৩. ডিজাইন পরিবর্তন: পবিত্র কাবা ঘর বর্তমানে

ঘনকাকৃতির অবয়বে আছে। পূর্বে হজরত

ইব্রাহিম (আ.) এটিকে এই আকৃতিতে তৈরি

করেননি। ইসলাম পূর্বযুগে কুরাইশরা কাবা

পুনঃনির্মাণ করে। তখন অর্থ সংকটের কারণে

কাবার কিছু অংশ নির্মাণের বাইরে থাকে। এটি মূলত

কাবার আভ্যন্তরীণ অংশ। বর্তমানে এটিকে

একটি ছোট দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

একে হাতিম হিসেবে অভিহিত করা হয়।

৪. কাবার দরজা মূলত কয়টি? কাবার মূল দরজা ছিল দুটি

এবং একটি জানালাও ছিল। বর্তমানে দরজা আছে

একটি। জানালা নেই। তবে কাবার অভ্যন্তরে

আরেকটি দরজা আছে। যা ছাদে যাওয়ার জন্য

ব্যবহৃত হয়।

৫. কাবা ঘরের অভ্যন্তর: কাবা ঘরের

অভ্যন্তরে কী আছে? এ নিয়ে সবার মনেই

প্রশ্ন জাগে। কাবার অভ্যন্তরে তিনটি পিলার মূল

ছাদটিকে ধরে রেখেছে। দুই পিলারের

মাঝে একটি টেবিলে সুগন্ধি রাখা আছে।

দেয়ালের উপরাংশকে একটি সবুজ কাপড়াবৃত

করে রেখেছে। কাপড়টিতে কোরআনের

বিভিন্ন আয়াত ক্যালিগ্রাফি খচিত।

৬. হাজরে আসওয়াদ ভেঙ্গেছিল: হাজরে

আসওয়াদ মূলত একটি বড় পাথর ছিল। তবে

বর্তমানে এটি মোট আটটি পাথরখন্ডের

সমষ্টি। নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাথরটি

ভেঙ্গে গেছে। সর্বপ্রথম এর উপর

রৌপ্যের ফ্রেম বাঁধাই করেন আব্দুল্লাহ বিন

জুবাইর।

৭. কাবার রক্ষক পরিবার কারা? অবাক করা ব্যাপার

হলো- ইসলাম পূর্বযুগ হতে এখন পর্যন্ত একটি

গোত্রই কাবার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন

করছে। গোত্রটির নাম বনু শাইবাহ। বিগত প্রায়

১৫ শতাব্দী ধরে এই গোত্রের হাতেই

আছে কাবা ঘরের চাবি।

৮. কাবা ঘর পরিষ্কার কার্যক্রম: কাবা ঘরের

রক্ষকগোত্র বনু শাইবাহর তত্ত্বাবধানে বছরে

দুইবার কাবা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

জমজম কুয়ার পানি, গোলাপজল এবং আরবের

বিখ্যাত সুগন্ধি উদের তেলের সমন্বয়ে একটি

বিশেষ ক্লিনিং লিকুইড তৈরি করা হয় এবং তা দিয়েই কাবা

ঘর পরিষ্কার করা হয়।

৯. উন্মুক্ত দরজা: কাবার দরজা একসময় সবার জন্যই

উন্মুক্ত ছিল। পরবর্তীতে লোক সমাগম

বেড়ে যাওয়ার কারণে কাবার দরজা বন্ধ করে

দেয়া হয়। বর্তমানেও এটি বিশেষ সময়ে

খোলা হয়ে থাকে।

১০. বিরতিহীন তাওয়াফ: কাবার আরেকটি অবিশ্বাস্য

দিক হলো- সবসময়ই এর চারপাশে তাওয়াফ

চলতে থাকে। শুধু নামাজের জামাত যে

সময়টুকুতে হয়, তা ছাড়া বাকি পুরো সময় ধরে

কাবার চারধারে চলতে থাকে অবিরাম তাওয়াফ।

শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮

মূর্তিপূজারী পিতা ও সম্প্রদায়ের নেতাদের নিকটে ইবরাহীমের দাওয়াত ও তাদের প্রদত্ত জবাবের সার কথাগুলি নিম্নরূপ:

ইবরাহীম (আঃ)-এর দাওয়াত : মূর্তিপূজারী কওমের প্রতি-

সকল নবীর ন্যায় ইবরাহীম (আঃ) স্বীয় কওমকে প্রথমে তাওহীদের দাওয়াত দেন। যেমন আল্লাহ বলেন,

وََإِبْرَاهِيمَ إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاتَّقُوهُ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ، إِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَوْثَاناً وَتَخْلُقُونَ إِفْكاً إِنَّ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقاً فَابْتَغُوا عِندَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ-(العنكبوت ১৬-১৭)-

‘স্মরণ কর ইবরাহীমকে, যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ’। ‘তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করছ, তারা তোমাদের রিযিকের মালিক নয়। কাজেই আল্লাহর নিকটে রিযিক তালাশ কর। তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই নিকটে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’ (আনকাবূত ৩৩/১৬-১৭)

ইবরাহীম (আঃ) উক্ত দাওয়াতের মধ্যে কেবল আল্লাহর স্বীকৃতি কামনা করেননি। বরং স্বীকৃতির ফলাফল (ثمرة الإقرار) আশা করেছিলেন। অর্থাৎ তারা যেন আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে মান্য করে এবং কোন অবস্থায় তা লংঘন না করে। কেননা স্বীকৃতির বিপরীত কাজ করা তা লংঘন করার শামিল।

পিতার প্রতি :

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيْقاً نَّبِيًّا، إِذْ قَالَ لِأَبِيْهِ يَا أَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لاَ يَسْمَعُ وَلاَ يُبْصِرُ وَلاَ يُغْنِي عَنكَ شَيْئاً، يَا أَبَتِ إِنِّي قَدْ جَاءنِيْ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَاتَّبِعْنِيْ أَهْدِكَ صِرَاطاً سَوِيّاً، يَا أَبَتِ لاَ تَعْبُدِ الشَّيْطَانَ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَنِ عَصِيّاً، يَا أَبَتِ إِنِّيْ أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ الرَّحْمَن فَتَكُوْنَ لِلشَّيْطَانِ وَلِيّاً-(مريم ৪১-৪৫)-

‘তুমি এই কিতাবে ইবরাহীমের কথা বর্ণনা কর। নিশ্চয়ই তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও নবী’(১৯/৪১)। ‘যখন তিনি তার পিতাকে বললেন, হে আমার পিতা! তুমি তার পূজা কেন কর, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার কোন উপকারে আসে না?(৪২)। ‘হে আমার পিতা! আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে, যা তোমার কাছে আসেনি। অতএব তুমি আমার অনুসরণ কর। আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব’(৪৩)। ‘হে আমার পিতা! শয়তানের পূজা করো না। নিশ্চয়ই শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য’(৪৪)। ‘হে আমার পিতা! আমি আশংকা করছি যে, দয়াময়ের একটি আযাব তোমাকে স্পর্শ করবে, অতঃপর তুমি শয়তানের বন্ধু হয়ে যাবে’(মারিয়াম ১৯/৪১-৪৫)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيْمُ لأَبِيْهِ آزَرَ أَتَتَّخِذُ أَصْنَاماً آلِهَةً إِنِّيْ أَرَاكَ وَقَوْمَكَ فِيْ ضَلاَلٍ مُّبِيْنٍ- (الأنعام ৭৪)-

‘স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম তার পিতা আযরকে বললেন, তুমি কি প্রতিমা সমূহকে উপাস্য মনে কর? আমি দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ও তোমার সম্প্রদায় স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছ’ (আন‘আম ৬/৭৪)

কিন্তু ইবরাহীমের এই প্রাণভরা আবেদন পিতা আযরের হৃদয় স্পর্শ করল না। রাষ্ট্রের প্রধান পুরোহিত এবং সম্রাটের মন্ত্রী ও প্রিয়পাত্র হওয়ায় সম্ভবত: বিষয়টি তার প্রেস্টিজ ইস্যু হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, وَإِذَا قِيلَ لَهُ اتَّقِ اللّهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ، ‘যখন তাকে বলা হয়, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার সম্মান তাকে পাপে স্ফীত করে। অতএব তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হ’ল নিকৃষ্টতম ঠিকানা’ (বাক্বারাহ ২/২০৬)। বস্ত্ততঃ অহংকারীদের চরিত্র সর্বত্র ও সর্বযুগে প্রায় একই হয়ে থাকে।

পিতার জবাব :

পুত্রের আকুতিপূর্ণ দাওয়াতের উত্তরে পিতা বলল,قَالَ أَرَاغِبٌ أَنْتَ عَنْ آلِهَتِيْ يَا إِبْرَاهِيْمُ لَئِن لَّمْ تَنْتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ وَاهْجُرْنِيْ مَلِيًّا- (مريم ৪৬)- ‘হে ইবরাহীম! তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, তবে আমি অবশ্যই পাথর মেরে তোমার মাথা চূর্ণ করে দেব। তুমি আমার সম্মুখ হ’তে চিরতরের জন্য দূর হয়ে যাও’(মারিয়াম ১৯/৪৬)

ইবরাহীমের জবাব:

পিতার এই কঠোর ধমকি শুনে পুত্র ইবরাহীম বললেন,

قَالَ سَلاَمٌ عَلَيْكَ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّي إِنَّهُ كَانَ بِي حَفِيّاً، وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَأَدْعُو رَبِّي عَسَى أَلاَّ أَكُونَ بِدُعَاء رَبِّي شَقِيّاً- (مريم ৪৭-৪৮)-

‘তোমার উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক! আমি আমার পালনকর্তার নিকটে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিশ্চয়ই তিনি আমার প্রতি মেহেরবান’। ‘আমি পরিত্যাগ করছি তোমাদেরকে এবং আল্লাহ ব্যতীত যাদের তোমরা পূজা কর তাদেরকে। আমি আমার পালনকর্তাকে আহবান করব। আশা করি আমার পালনকর্তাকে আহবান করে আমি বঞ্চিত হব না’ (মারিয়াম ১৯/৪৭-৪৮)

রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮

ইবরাহীম মূর্তি ভাঙ্গলেন : জ্ঞানীদের ইশারাই যথেষ্ট।

ইবরাহীম মূর্তি ভাঙ্গলেন :

জ্ঞানীদের ইশারাই যথেষ্ট। কিন্তু মানুষ যখন কোন কিছুর প্রতি অন্ধভক্তি পোষণ করে, তখন শত যুক্তিও কোন কাজ দেয় না। ফলে ইবরাহীম ভাবলেন, এমন কিছু একটা করা দরকার, যাতে পুরা সমাজ নড়ে ওঠে ও ওদের মধ্যে হুঁশ ফিরে আসে। সাথে সাথে তাদের মধ্যে তাওহীদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। সেমতে তিনি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় দেবমন্দিরে গিয়ে মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলার সংকল্প করলেন।

ইবরাহীম (আঃ)-এর সম্প্রদায় বছরের একটা বিশেষ দিনে উৎসব পালন করত ও সেখানে নানারূপ অপচয় ও অশোভন কাজ করত। যেমন আজকাল প্রবৃত্তি পূজারী ও বস্ত্তবাদী লোকেরা করে থাকে কথিত সংস্কৃতির নামে। এইসব মেলায় সঙ্গত কারণেই কোন নবীর যোগদান করা সম্ভব নয়। কওমের লোকেরা তাকে উক্ত মেলায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানালো। কিন্তু তিনি অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেন (ছাফফাত ৩৭/৮৯)। অতঃপর তিনি ভাবলেন, আজকের এই সুযোগে আমি ওদের দেবমন্দিরে প্রবেশ করে মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেব। যাতে ওরা ফিরে এসে ওদের মিথ্যা উপাস্যদের অসহায়ত্বের বাস্তব দৃশ্য দেখতে পায়। হয়তবা এতে তাদের অনেকের মধ্যে হুঁশ ফিরবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান জাগ্রত হবে ও শিরক থেকে তওবা করবে।

অতঃপর তিনি দেবালয়ে ঢুকে পড়লেন ও দেব-দেবীদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, (তোমাদের সামনে এত নযর-নেয়ায ও ভোগ-নৈবেদ্য রয়েছে)। অথচ ‘তোমরা তা খাচ্ছ না কেন? কি ব্যাপার তোমরা কথা বলছ না কেন? তারপর তিনি ডান হাতে রাখা (সম্ভবতঃ কুড়াল দিয়ে) ভীষণ জোরে আঘাত করে সবগুলোকে গুঁড়িয়ে দিলেন (ছাফফাত ৩৭/৯১-৯৩)। তবে বড় মূর্তিটাকে পূর্বাবস্থায় রেখে দিলেন, যাতে লোকেরা তার কাছে ফিরে যায় (আম্বিয়া ২১/৫৮)

মেলা শেষে লোকজন ফিরে এল এবং যথারীতি দেবমন্দিরে গিয়ে প্রতিমাগুলির অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে গেল। ‘তারা বলাবলি করতে লাগল, এটা নিশ্চয়ই ইবরাহীমের কাজ হবে। কেননা তাকেই আমরা সবসময় মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে বলতে শুনি। অতঃপর ইবরাহীমকে সেখানে ডেকে আনা হ’ল এবং জিজ্ঞেস করল, أَأَنتَ فَعَلْتَ هَذَا بِآلِهَتِنَا يَا إِبْرَاهِيمُ؟ ‘হে ইবরাহীম! তুমিই কি আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ আচরণ করেছ’? (আম্বিয়া ২১/৬২)

ইবরাহীম বললেন, بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَذَا فَاسْأَلُوهُمْ إِنْ كَانُوا يَنْطِقُوْنَ- ‘বরং এই বড় মূর্তিটাই একাজ করেছে। নইলে এদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তারা কথা বলতে পারে’ (আম্বিয়া ২১/৬৩)। সম্প্রদায়ের নেতারা একথা শুনে লজ্জা পেল এবং মাথা নীচু করে বলল, قَدْ عَلِمْتَ مَا هَؤُلاَء يَنْطِقُوْنَ- ‘তুমি তো জানো যে, এরা কথা বলে না’। ‘তিনি বললেন, قَالَ أَفَتَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَنفَعُكُمْ شَيْئاً وَّلاَ يَضُرُّكُمْ- ‘তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত কর, যা তোমাদের উপকারও করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না’ (আম্বিয়া ২১/৬৫-৬৬)। তিনি আরও বললেন,قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ، وَالله خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ- ‘তোমরা এমন বস্ত্তর পূজা কর, যা তোমরা নিজ হাতে তৈরী কর’? ‘অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে ও তোমাদের কর্মসমূহকে সৃষ্টি করেছেন’ (ছাফফাত ৩৭/৯৫-৯৬)أُفٍّ لَّكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللهِ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ-‘ধিক তোমাদের জন্য এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের পূজা কর, ওদের জন্য। তোমরা কি বুঝ না’? (আম্বিয়া ২১/৬৭)

তারপর যা হবার তাই হ’ল। যিদ ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে সম্প্রদায়ের নেতারা ইবরাহীমকে চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করল। তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, একে আর বাঁচতে দেওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, একে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে মারতে হবে, যেন কেউ এর দলে যেতে সাহস না করে। তারা তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার প্রস্তাব গ্রহণ করল এবং সেটা বাদশাহ নমরূদের কাছে পেশ করল। সম্রাটের মন্ত্রী ও দেশের প্রধান পুরোহিতের ছেলে ইবরাহীম। অতএব তাকে সরাসরি সম্রাটের দরবারে আনা হ’ল।

বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮

আলহামদুল্লিলাহ....আরেকটি জুম্মা সকল! দিলের শ্রেষ্ঠ দিন আবার ঘুরে এসেছে!

আলহামদুলিল্লাহ ... আরেকটি জুম্মা - সকল

দিনের শ্রেষ্ঠ দিনটি আবার ঘুরে এসছে ।

আপনি কি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন

না ? এই দিনটিকে বৃথা নষ্ট হতে দেবেন না

কারণ বহু বরকত ও ফজিলত নিহিত রয়েছে

আজকের দিনটিতে

নিম্নলিখিতি সুন্নাত গুলো আদায় করতে

সচেষ্ট হন : !!►►

১) ফজরের সালাত জামাতে আদায় করুন

(আল-বায়হাকী , সহী আল-আলবানি, ১১১৯)

২) সালাত আল-জুম্মার পূর্বের এবং পরের

করণীয়ঃ

➲ জুম্মার দিন গোসল করা (বুখারী এবং

মুসলিম : # ১৯৫১ এবং # ৯৭৭)

➲ জুম্মার সালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া

(বুখারী এবং মুসলিম : # ৯২৯ এবং ১৯৬৪)

➲ পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা (আল-

তিরমিজি, ৪৯৬)

➲ মনোযোগ সহকারে জুম্মার খুৎবা শোনা

(আল-বুখারী ৯৩৪ এবং মুসলিম ৮৫১)

৩) জুম্মার দিন আপনার দুয়া কবুল হবার সেই

মুহূর্তটির অনুসন্ধান করুন (বুখারী এবং

মুসলিম : # ৯৩৫ এবং # ১৯৬৯)

৪) সূরা কাহাফ তিলাওয়াত (আল-হাকিম,

২/৩৯৯; আল-বায়হাকী, ৩/২৪৯)

৫) আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম উপর দুরদ পাঠ (ইবনে মাজাহ #

১০৮৫ , আবু দাউদ , # ১০৪৭)

বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮

মেয়েদের কপালে টিপ কোথায় থেকে, কিভাবে ব্যবহার শুরু ? ----------

মেয়েদের কপালে টিপ কোথায় থেকে, কিভাবে ব্যবহার শুরু ? ----------

হযরত ইবরাহীম আঃ কে যখন আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য নমরুদ ৮ মাইলপরিমান জায়গা আগুন জ্বালালো , তখন একটা নতুন সমস্যা দেখা দিল।

আগুনের উত্তাপ এতই বেশি ছিল যে তার কাছে পৌছানো যাচ্ছিল না। তাই একটা চরক বানানো হল যার মাধ্যমে ইবরাহীম (আঃ) কে ছুড়ে আগুনে নিক্ষেপ করা যায়।

কিন্তু রহমতের ফেরেশতা রা চরকের একপাশে ভর করে থাকায় চরক ঘুরানো যাচ্ছিল না।

তখন শয়তান নমরুদকে কুবুদ্ধি দিল কিছু নগ্ন মেয়ে(পতিতা) এনে চরকের সামনে বসিয়ে দিতে, কারন এ অবস্থায় ফেরেশতারা থাকতে পারবে না। তাই করা হল এবং ফেরেশতারা চলে গেল, ইবরাহীম (আঃ) কে আগুনে নিক্ষেপ করতে তারা সক্ষম হলেন।

পরবর্তিতে ঐ মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান করা হল এবং তাদের মাথায় তীলক পরানো হল। যেটা এখন আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।

অতএব যারা বলে— মহিলাদের সৌন্দর্য সব জায়গায় এবং এই দোহাই দিয়ে টিপ কে নিজেদের জন্য বৈধ মনে করেন, তারা যুগযুগ ধরে নিজেদের কোন পরিচয় বহন করছেন তা একবার ভেবে দেখবেন ?

পতিতার পরিচয় বোঝানোর জন্য যে টিপ ব্যবহার করা হত, তা আজ আমাদের উপমহাদেশে ফ্যাশন! ওহে! মুসলিম নারীরা, এই সত্য কথাটা জানার পর ও কি আপনি আপনাদের কপালে টিপ পড়বেন??