সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৮

মানবদেহের মজার সব তথ্য!


মানবদেহের মজার সব তথ্য !!











১. মানুষের পাকস্থলীতে দিনে ২ লিটার পর্যন্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি হয়,যা কিনা ধাতুকেও পর্যন্ত ক্ষয় করতে সক্ষম।কিন্তু পাকস্থলীর কোন ক্ষতি হয় না কারন এতে প্রতি মিনিটে ক্ষয়ের সমানতালে ৫০০,০০০টি করে নতুন কোষ উতপন্ন হচ্ছে।

২. একজন পুরুষের শরীরে গড়ে ৫ লিটার রক্ত থাকে,নারীর শরীরে থাকে ৪.৩ লিটার।

৩. মানুষের চুল দিনে দৈর্ঘ্যে ০.৫ মিলিমিটার করে বাড়ে।

৪. হাতের নখ সপ্তাহে .০৫ সেন্টিমিটার করে বাড়ে।আর পায়ের নখ এর এক-চতুর্থাংশ গতিতে বাড়ে।

৫. আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের ভেতর দিয়ে ঘন্টায় ২৯০ কিমি বেগে সংকেত আদান-প্রদান হয়।

৬. হাঁচির সময় নাক দিয়ে ১৬০ কিমি/ঘন্টা বেগে বাতাস বের হয়।

৭. মানুষের ত্বক থেকে প্রতি মিনিটে ৫০,০০০ মৃত মাইক্রোস্কপিক কণা ঝরে পড়ে।

৮. পুরুষের চেয়ে নারীর শরীরের একই অস্থি সাধারনত ৬-১৩% ছোট হয়ে থাকে।

৯. মানুষের শরীরের ৯৯ শতাংশই অক্সিজেন,কার্বন,হাইড্রোজেন,নাইট্রোজেন,ক্যালসিয়াম আর ফসফরাস দিয়ে তৈরি।

১০. মানুষের শরীরের সম্মিলিত অস্থির ভর মোট শরীরের ভরের পাঁচ ভাগের এক ভাগ।

১১. মানুষের শরীরে যত রক্তবাহী নালী আছে সেগুলা জোড়া লাগালে ১০০,০০০ কিলোমিটার হবে যা দিয়ে পৃথিবীকে ২.৫বার প্যাচানো যাবে।

১২. মানুষের রক্তে ২৫,০০০,০০০,০০০-৩০,০০০,০০০,০০০ টি লোহিত কণিকা থাকে যেগুলার গড় আয়ু ১২০ দিন।প্রতি মুহুর্তে শরীরে ১,২০০,০০০-২,০০০,০০০ টি লোহিত কণিকা তৈরি হয়।একজন মানুষের শরীরে তার জীবদ্দশায় যত লোহিত কণিকা তার মোট ভর প্রায় আধা টন।

১৩. মানুষের শরীরে যে পরিমান কার্বন আছে তা দিয়ে ৯০০ টি পেন্সিল তৈরি করা যাবে।জমে থাকা চর্বি দিয়ে বানান যাবে ৭৫টি মোমবাতি।২২০টি ম্যাচের কাঠি বানাবার মত ফসফরাস আছে শরীরে।

১৪. হৃদপিন্ড মিনিটে গড়ে ৭০ বার করে দিনে প্রায় ১০০,০০০ বারের বেশি সারাদিনে পাম্প হয়।প্রতিবারে ৫৯ সিসি রক্ত পাম্প হয় যার পরিমানটা দিনের হিসেবে ১৩,৬৪০ লিটার।

১৫. ত্বকের ৩,০০০,০০০ ঘর্মগ্রন্থি দিয়ে দিনে .৫ লিটার ঘাম নির্গত হয় যার পরিমান গরমের দিনে ১৩.৫ লিটার পর্যন্ত হতে পারে।

১৬. মানুষ গড়ে মিনিটে ২০ বার শ্বাস নেয়,এতে ৬ লিটার বাতাস থাকে।এভাবে দিনে মোট ৮,৬৪০ লিটার বাতাস ২৮,৮০০ বার শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে নেয় মানুষ।

১৭. বয়স ও পরিপার্শ্বে উপর নির্ভর করে মানুষের দিনে ৪০০ মিলিলিটার থেকে ২ লিটার পর্যন্ত প্রস্রাব হতে পারে।

মহানবীর জীবন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব: নরেন্দ্র মোদি


মহানবীর জীবন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব: নরেন্দ্র মোদি




আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সমতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ যে জীবন যাপন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) করেছেন, তা অনুসরণ করা সকল মানুষের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


তিনি বলেন, ‘মহানবী জ্ঞান এবং সমবেদনাকে গুরুত্ব দিতেন। তাঁর মধ্যে এক ফোঁটাও অহংবোধ দেখা যায়নি। তিনি প্রচার করেছেন, মানুষের সব ধরনের অহংবোধকে জ্ঞান একাই পরাজিত করতে পারে।’


রবিবার ‘মান কি বাত’ নামের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে নরেন্দ্র মোদি এসব কথা বলেন। প্রতি মাসে আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এতে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন মোদি। এবার এ অনুষ্ঠানে তিনি মহানবীকে নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি গৌতম বুদ্ধেরও প্রশংসা করেন।


মোদী বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন পরেই রমজান মাস শুরু হবে। পুরো বিশ্বেই সম্মান আর শ্রদ্ধার সঙ্গে রমজান মাস পালন করা হয়ে থাকে। রোজা পালন হচ্ছে এমন এক সামাজিক ও সমষ্টিগত বিষয় যা একজন ব্যক্তিকে ক্ষুধার্ত থাকার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সাহায্য করে। রোজা রাখলে একজন মানুষ অন্যজনের ক্ষুধার্ত অবস্থা বুঝতে পারে। যখন সে তৃষ্ণার্ত থাকে তখন সে অন্যের তৃষ্ণার্ত অবস্থা অনুধাবন করতে পারে। হযরত মোহাম্মদ (দ.) যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা স্মরণ করার একটি বড় সুযোগ হলো রোজা।’


মহানবীর সমতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ জীবন যাপন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একবার এক ব্যক্তি মহানবীকে (দ.) প্রশ্ন করেছিলেন- ইসলামের সবচেয়ে উত্তম জিনিস কি? উত্তরে মহানবী বলেন- একজন দরিদ্র এবং অভাবগ্রস্তকে খাওয়ানো এবং আপনি কাউকে চেনেন বা না চেনেন সবার সঙ্গে আন্তরিক থাকা।’


মোদী বলেন, ‘মহানবীর শিক্ষা কারো যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিছু থাকে তবে তার উচিত অভাবগ্রস্তদের মাঝে সেগুলো বিতরণ করা। তাই রমজান মাসে দান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এই পবিত্র মাসে উদারহস্তে দান করে থাকেন।’

‘তিনি (মহানবী) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন বস্তুগত সম্পদ কখনোই মানুষকে সম্পদশালী করতে পারে না। বরং অভ্যন্তরীন জ্ঞানই মানুষকে সম্পদশালী করে’- বলেন নরেন্দ্র মোদি।


পবিত্র রমজান মাসে সব মানুষ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহানবীর বার্তা অনুসরণ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মোদি। একই অনুষ্ঠানে বুদ্ধ পুর্ণিমা উপলক্ষে গৌতম বুদ্ধেরও প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, লাইভমিন্ট

বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮

মায়ের সম্মান নিয়ে হজরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা"

মায়ের সম্মান নিয়ে হজরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা"











==============================

======

"একদিন হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে কাঁদছেন। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হোরায়রা তুমি কেন কাঁদছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমার মা আমাকে মেরেছেন। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেন তুমিকি কোন বেয়াদবী করেছ?

:

আবু হোরায়রা বললেন, না হুজুর কোন বেয়াদবী করিনি। আপনার দরবার হতে বাড়ি যেতেআমার রাত হয়েছিল বিধায় আমার মা আমাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করায় আমি আপনার কথা বললাম। আর আপনার কথা শুনে মা রাগে আমাকে মারধর করল আর বলল, "হয়ত আমার বাড়ি ছাড়বি আর না হয় মুহাম্মদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবার ছাড়বি।"

:

আমি বললাম, "ও আমার মা। তুমি বয়স্ক মানুষ। তোমার গায়ে যত শক্তি আছে তত শক্তি দিয়ে মারতে থাকো। মারতে মারতে আমাকে বাড়ি থেকে করে দাও। তবুও আমি আমার রাসুলকে ছাড়তে পারবো না।"

:

তখন রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তোমার মা তোমাকে বের করে দিয়েছেন আর এজন্য আমার কাছে নালিশ করতে এসেছ? আমার তো এখানে কিছুই করার নেই।"

:

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বললেন, "হে রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আমার মায়ের জন্য এখানে নালিশ করতে আসি নাই।"

:

রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, "তাহলে কেন এসেছ?"

:

আবু হোরায়রা বললেন, আমি জানি আপনি আল্লাহর নবী। আপনি যদি হাত উঠিয়ে আমার মায়ের জন্য দোয়া করতেন, যাতে আমার মাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।

:

আর তখনই সাথে সাথে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, "হে আল্লাহ! আমি দোয়া করি আপনি আবু হোরায়রার আম্মাকে হেদায়েত করে দেন।”

:

রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেন আর আবু হোরায়রা বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। পিছন থেকে কয়েকজন লোক আবু হোরায়রার জামা টেনে ধরল এবং বললো, হে আবু হোরায়রা! "তুমি দৌড়াচ্ছ কেন?"

:

তখন আবু হোরায়রা বললেন, "ওহে সাহাবীগণ তোমরা আমার জামা ছেড়ে দাও। আমাকে দৌড়াতে দাও।"

:

"আমি দৌড়াইতেছি এই কারণে যে, আমি আগে পৌঁছলাম নাকি আমার নবীজির দোয়া আগে পৌঁছে গেছে।"

:

হযরত আবু হোরায়রা দরজায় ধাক্কাতে লাগলো। ভিতর থেকে তার মা যখন দরজা খুললো তখন আবু হোরায়রা দেখলেন তার মার সাদা চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। তখন মা আমাকে বললেন, "হে আবু হোরায়রা! তোমাকে মারার পর আমি বড় অনুতপ্ত হয়েছি, অনুশোচনা করেছি। মনে মনে ভাবলাম আমার ছেলে তো কোন খারাপ জায়গায় যায়নি। কেন তাকে মারলাম? আমি বরং লজ্জায় পড়েছি তোমাকে মেরে। হে আবু হোরায়রা! আমি গোসল করেছি। আমাকে তাড়াতাড়ি রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে চল।"

:

আর তখনই সাথে সাথে আবু হোরায়রা তার মাকে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে গেলেন। আর তার মাকে সেখানেই কালিমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন।

:

"পিতা মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা রক্ষা করতে পারো।" সুবাহান আল্লাহ! [তিরমিজি ]

বুধবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী মসজিদ আছে কোন দেশে? জানলে অবাক হয়ে যাবেন!


পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী মসজিদ আছে কোন দেশে? জানলে অবাক হয়ে যাবেন!




সাধারণভাবে, ইসলাম ধর্মের উপাসনা গৃহই হল মসজিদ। আর সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশী সংখ্যক মসজিদ রয়েছে। সংখ্যাটা হল ৩০ হাজারের চেয়েও বেশী।


ভারতের বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ দেখে নিন এক নজরে-

আদিনা মসজিদ- ১৩৬৩ সালে তৈরী। পশ্চিম বঙ্গের মালদা জেলার ইংলিশ বাজারে অবস্থিত। সুলতান সিকান্দর শাহ তৈরী করেছিলেন।

চেরামন জুমা মসজিদ- কেরলে অবস্থিত। ভারতের প্রথম মসজিদ এটা।


টিপু সুলতান মসজিদ- কলকাতায় অবস্থিত সুপ্রাচীন এই মসজিদ ১৮৩২ সালে তৈরী হয়।


জামা মসজিদ- ১৮০২ সালে স্থাপিত মুম্বাইয়ে অবস্থিত।


মতি মসজিদ- দিল্লিতে অবস্থিত ১৬৬০ খ্রীষ্টাব্দে স্থাপিত।


এছাড়া ভারতে এবং সারা পৃথিবীতে আরও অনেক বিখ্যাত ঐতিহাসিক মসজিদ রয়েছে।

সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

ঈসা (আঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র ও তাঁর ঊর্ধ্বারোহন


ঈসা (আঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র ও তাঁর ঊর্ধ্বারোহন :

তৎকালীন রোম সম্রাট ছাতিয়ূনুস-এর নির্দেশে (মাযহারী) ঈসা (আঃ)-কে গ্রেফতারের জন্য সরকারী বাহিনী ও ইহুদী চক্রান্তকারীরা তাঁর বাড়ী ঘেরাও করে। তারা জনৈক নরাধমকে ঈসা (আঃ)-কে হত্যা করার জন্য পাঠায়। কিন্তু ইতিপূর্বে আল্লাহ ঈসা (আঃ)-কে উঠিয়ে নেওয়ায় সে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে যায়। কিন্তু এরি মধ্যে আল্লাহর হুকুমে তার চেহারা ঈসা (আঃ)-এর সদৃশ হয়ে যায়। ফলে ইহুদীরা তাকেই ঈসা ভেবে শূলে বিদ্ধ করে হত্যা করে।

ইহুদী-নাছারারা কেবল সন্দেহের বশবর্তী হয়েই নানা কথা বলে এবং ঈসাকে হত্যা করার মিথ্যা দাবী করে। আল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই। তারা কেবলই সন্দেহের মধ্যে পড়ে আছে। এটা নিশ্চিত যে, তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি’(নিসা ৪/১৫৭)। বরং তার মত কাউকে তারা হত্যা করেছিল ।

উল্লেখ্য যে, ঈসা (আঃ) তাঁর উপরে বিশ্বাসী সে যুগের ও পরবর্তী যুগের সকল খৃষ্টানের পাপের বোঝা নিজে কাঁধে নিয়ে প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ শূলে বিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে খৃষ্টানদের দাবী স্রেফ প্রতারণা ও অপপ্রচার বৈ কিছুই নয়।

আল্লাহর পাঁচটি অঙ্গীকার :

ইহুদীদের বিপক্ষে হযরত ঈসা (আঃ)-কে সাহায্যের ব্যাপারে আল্লাহ পাঁচটি ওয়াদা করেছিলেন এবং সবক’টিই তিনি পূর্ণ করেন। (১) হত্যার মাধ্যমে নয় বরং তার স্বাভাবিক মৃত্যু হবে (২) তাঁকে ঊর্ধ্বজগতে তুলে নেওয়া হবে (৩) তাকে শত্রুদের অপবাদ থেকে মুক্ত করা হবে (৪) অবিশ্বাসীদের বিপক্ষে ঈসার অনুসারীদেরকে ক্বিয়ামত অবধি বিজয়ী রাখা হবে এবং (৫) ক্বিয়ামতের দিন সবকিছুর চূড়ান্ত ফায়ছালা করা হবে। এ বিষয়গুলি বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতে। যেমন আল্লাহ বলেন,

إِذْ قَالَ اللهُ يَا عِيْسَى إِنِّيْ مُتَوَفِّيْكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَجَاعِلُ الَّذِيْنَ اتَّبَعُوْكَ فَوْقَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأَحْكُمُ بَيْنَكُمْ فِيْمَا كُنْتُمْ فِيْهِ تَخْتَلِفُوْنَ- (آل عمران ৫৫)-

‘আর স্মরণ কর যখন আল্লাহ বললেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে ওফাত দিব এবং তোমাকে আমার কাছে তুলে নেব এবং তোমাকে কাফিরদের হাত থেকে মুক্ত করব। আর যারা তোমার অনুসরণ করবে, তাদেরকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত কাফিরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করে রাখবো। অতঃপর তোমাদের সবাইকে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তোমাদের মধ্যকার বিবাদীয় বিষয়ে ফায়ছালা করে দেব’ (আলে ইমরান ৩/৫৫)

উক্ত আয়াতে বর্ণিত مُتَوَفِّيْكَ অর্থ ‘আমি তোমাকে ওফাত দিব’। ‘ওফাত’ অর্থ পুরোপুরি নেওয়া। মৃত্যুকালে মানুষের আয়ু পূর্ণ হয় বলে একে ‘ওফাত’ বলা হয়। রূপক অর্থে নিদ্রা যাওয়াকেও ওফাত বা মৃত্যু বলা হয়। যেমন আল্লাহ বলেন,اللهُ يَتَوَفَّى الْأَنْفُسَ حِيْنَ مَوْتِهَا وَالَّتِيْ لَمْ تَمُتْ فِيْ مَنَامِهَا-‘আল্লাহ মানুষের প্রাণ নিয়ে নেন তার মৃত্যুকালে, আর যে মরেনা তার নিদ্রাকালে’ (যুমার ৩৯/৪২)। সেকারণ যাহহাক, ফাররা প্রমুখ বিদ্বানগণ مُتَوَفِّيْكَ وَرَافِعُكَ إِلىَّ -এর অর্থ বলেন, আমি আপনাকে নিজের কাছে উঠিয়ে নেব এবং শেষ যামানায় (পৃথিবীতে নামিয়ে দিয়ে) স্বাভাবিক মৃত্যু দান করব। এখানে বর্ণনার আগপিছ হয়েছে মাত্র’ (কুরতুবী, ইবনু কাছীর)। যা কুরআনের বহু স্থানে হয়েছে। ঈসার অবতরণ, দাজ্জাল নিধন, পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য স্থাপন ইত্যাদি বিষয়ে ছহীহ ও মুতাওয়াতির হাদীছ সমূহ বর্ণিত হয়েছে। প্রায় সকল বড় বড় নবীই হিজরত করেছেন। এক্ষণে পৃথিবী থেকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া, অতঃপর পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু দান করা- এটা ঈসা (আঃ)-এর জন্য এক ধরনের হিজরত বৈ কি! পার্থক্য এই যে, অন্যান্য নবীগণ দুনিয়াতেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে হিজরত করেছেন। পক্ষান্তরে ঈসা (আঃ) দুনিয়া থেকে আসমানে হিজরত করেছেন। অতঃপর আসমান থেকে দুনিয়াতে ফিরে আসবেন। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত এবং তিনিই সকল ক্ষমতার অধিকারী।

অতঃপর ঈসার অনুসারীদের ক্বিয়ামত অবধি বিজয়ী করে রাখার অর্থ ঈমানী বিজয় এবং সেটি ঈসা (আঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অনুসারীদের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছে। ঈমানী বিজয়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিজয় যেমন খেলাফত যুগে হয়েছে, ভবিষ্যতে আবারও সেটা হবে। এমনকি কোন বস্তিঘরেও ইসলামের বিজয় নিশান উড়তে বাকী থাকবে না। সবশেষে ক্বিয়ামত প্রাক্কালে ঈসা ও মাহদীর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক বিজয় সংঘটিত হবে এবং সারা পৃথিবী শান্তির রাজ্যে পরিণত হবে।[7]

শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮

আজ পবিত্র শব-ই মেরাজ....



আজ পবিত্র শব-ই মেরাজ

www.koborki.blogspot.com

 শব-ই মেরাজ আজ। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষের রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের অপার সব রহস্য।


রাসূল (সা.) উম্মতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ৫ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে আসেন, যে নামাজ মু’মিনের মেরাজস্বরূপ।


এমন নানা কারণে এ রাত অতি পবিত্র ও মহান আল্লাহর অফুরন্ত রহমত-বরকতে সমৃদ্ধ। দিনটিকে মুসলিম উম্মাহর বিশেষ দিন হিসেবে পালন করা হয়।


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, রোজা রাখা, নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শবে মেরাজ পালন করবেন।


আল্লাহপাক আমাদের সকলকে পবিত্র শব-ই মেরাজ যথাযথভাবে পালনের তৌফিক দান করুন- আমিন।

শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৮

: পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা ভলবেন! => জিবরাইল! মৃত্যু বরণ কর! => মিকাইল! মৃত্যু বরণ কর! www.koborki.blogspot.com

www.koborki.blogspot.com

পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সপ্তআকাশ ভেঙে দিবেন। সপ্ত আকাশে অবস্হানরত ফেরেশতারা মৃত্যুর দুয়ারে। সমস্হ ফেরেশতা মৃত্যুর পেয়ালা পান করবে। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও বরণ করবে মৃত্যুর মালা। অতঃপর নির্দেশ হবে -

:

=> জিবরাইল! মৃত্যু বরণ কর!

=> মিকাইল! মৃত্যু বরণ কর!

:

আল্লাহ তাআলার ইশক ও ভালোবাসা সুপারিশ করবে - 'হে আল্লাহ! জিবরাইল ও মিকাইলকে রক্ষা করো!' তখন আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করবেন -

ﺍَﺳْﻜُﺖْ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﺘَﺒْﺖُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺗَﺤْﺖُ ﻋَﺮْﺷِﻰْ

"চুপ কর! আমার আরশের নিচে যারা আছে সকলের জন্যই আমি মৃত্যুর ফয়সালা করে দিয়েছি।"

:

মৃত্যুবরণ করবে জিবরাইল। মিকাইল ও শেষ। সিঙা ফুৎকারের ইসরাফিলও ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে। সিঙার ফুৎকার হাওয়ায় ভেসে উড়ে যাবে আরশে। আরশের উপরে আছেন আল্লাহ। নিচে কেবল আজরাইল। তখন আল্লাহ তাআলা প্রশ্ব করবেন - 'বলো আর কে বাকি আছে?'

বলবে, 'উপরে তুমি আর নিচে তোমার গোলাম।'

নির্দেশ করবেন -

ﺍِﻧَّﻚَ ﻣَﻴّـِﺖٌ

"তুমিও মরে যাও।"

এতদিন পর্যন্ত যে সকলের রুহ কবজ করে ফিরতো আজ সে নিজেই নিজের প্রাণ কবজ করবে। যদি মানুষ বেঁচে থাকতো তাহলে মৃত্যুমুখে আজরাইলের সেই চিৎকার শুনে হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে সকল মানুষ মারা যেত।

:

=> আজ কারও জন্য কাঁদবার মত কেউ নেই।

=> আজ কাউকে দাফন করার মত কেউ নেই।

=> আজ কাউকে কাফন পরানোর মত কেউ নেই।

=> আজ কারও জন্য মাতম করার কেউ নেই।

=> আজ সম্পদ হারিয়ে যাওয়ার ফলে মামলা

করার মত কেউ নেই।

=> আজ দরবার আছে। দরবারী কেউ নেই।

=> কুরসী আছে। কুরসীতে বসার কেউ নেই।

=> বাদশাহী আছে। বাদশাহ কেউ নেই।

=> পেয়ালা আছে পানকারী মত কেউ নেই।

=> আজ এক আল্লাহ আছেন। তাঁর কোন শরীক নেই।

*

আল্লাহ তাআলা যখন সবাইকে মৃত্যু দিয়ে দিবেন তখন ঘোষণা করবেন -

ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻰ ﺷَﺮِ ﻳْﻜٌﺎ ﻓَﻠْﻴَﺂﺕِ ...

"আমার কোন শরীক আছে কি যে আমার মোকাবিলা করবে?"

তিনি তিনবার এই ঘোষণা দিবেন। বলবেন, আমার কোন প্রতিপক্ষ থাকলে সামনে এসো। অতঃপর তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে নত করে দিয়ে ঘোষণা করবেন -

ﺍَﻧَﺎ ﺍﻟْﻘُﺪُّﺱُ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﺆْ ﻣِﻦُ

"আমিই কুদ্দুস সালাম ও মু'মিন।"

পুণরায় ঝাঁকুনি দিয়ে একই বাণী উচ্চারণ করবেন। তৃতীয়বার উচ্চারণ করবেন -

ﺍَﻧﺎَ ﺍﻟْﻤُﻬَﻴْﻤِﻴﻦُ ﺍﻟْﻌَﺰِ ﻳْﺰُ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺮُ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُ

"আমিই মুহাইমিনুল আজিজুল জব্বারুল মুতাকাব্বির।"

:

তারপর বলবেন -

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ

"আজ রাজারা কোথায়?"

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭُﻭْﻥَ

"জালেমরা আজ কোথায়?"

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُﻭْﻥَ

"অহঙ্কারীরা আজ কোথায়?"

# বলবেনঃ

ﻟِﻤَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ

" আজ বাদশাহ কে?"

কোন জবাব নেই। অতঃপর আল্লাহ নিজেই বলবেন -

َ ﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻮَﺍﺣِﺪِ ﺍﻟْﻘَﻬَّﺎﺭِ

" পরাক্রমশালী এক আল্লাহরই নিরঙ্কুশ রাজত্ব।"

- [ সুরা মু'মিনঃ ১৬ ]

:

যেখানে হিসাব নিবেন স্বয়ং আল্লাহ। যেখানে ব্যাবস্হা আছে শাস্তি ও পুরষ্কারের। যেখানে ব্যাবস্হা আছে চিরস্হায়ী সম্মান ও চিরস্হায়ী অপমানের। যেখানে চিরন্তন সুশ্রী রূপ আছে, আছে কুশ্রী রূপও। যেখানকার সফলতা চিরন্তন, ব্যার্থতাও চিরন্তন। যেখানকার অপমান যেমন সীমাহীন তেমনি সীমাহীন সম্মানও।

:

আল্লাহ যদি কারও প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে তাকে বেহেশত দিবেন আর অসন্তুষ্ট হলে দিবেন জাহান্নাম। আমাদের এই মরণই যদি শেষ কথা হতো তাহলে আর কোন চিন্তা ছিলোনা। নামাজ পড়তাম কিংবা না পড়তাম। সত্য বলতাম কিংবা না বলতাম। অন্যায় করতাম কিংবা কল্যাণ করতাম। সুদ খেতাম কিংবা না খেতাম। মানুষের প্রতি ন্যায় করতাম কিংবা অন্যায় করতাম।

*

কিন্তু মৃত্যুই শেষ নয়। কবর, হাশর, মিযান, পুলসিরাত, জান্নাত অথবা জাহান্নাম এসকল মন্জ্ঞিল রয়েছে আমাদের সামনে। আল্লাহ সকলের জন্য তা সহজ করে দিন। আমিন।