সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮

পবিত্র কাবা শরিফ সম্পর্কে এই ১০টি অজানা তথ্য প্রতিটি মুসলমানের জানা অপরিহার্য!

পবিত্র কাবা শরিফ সম্পর্কে এই ১০টি অজানা তথ্য

প্রতিটি মুসলমানের জানা অপরিহার্য- পবিত্র কাবা।

আল্লাহর ঘর। প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়রাজ্যে বাস

করে বাইতুল্লাহ জিয়ারতের স্বপ্ন। কাবার পরিচিতি

বিশ্বজোড়া। কিন্তু এই কাবাঘর সম্পর্কিত এমন

কিছু তথ্য রয়েছে যা অনেকই জানেন না। কাবা

শরিফ সম্পর্কে অজানা ১০টি তথ্য নিয়ে

আমাদের আজকের আয়োজন।

১. কাবা ঘর কয়েকবার নির্মিত হয়েছে: নানা

ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধাবস্থার কারণে

কাবা ঘর কয়েকবার নির্মাণ করা হয়েছে। অধিকাংশ

ঐতিহাসিকের মতে কাবা শরিফ মোট ১২ বার

নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান ডিজাইনের নির্মাতা

মুসলিম শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। হাজ্জাজ বিন

ইউসুফ নিজে এই ডিজাইনটি করেননি।

বরং তিনিও ইসলাম পূর্ববর্তী কুরাইশদের ডিজাইন

অনুসরণ করেছেন। পরবর্তী সময়ে বেশ

কয়েকবার কাবা শরিফের সংস্কারের কাজ করা

হলেও মূল ডিজাইনে কোনো পরিবর্তন করা

হয়নি। সর্বশেষ কাবা শরিফের সংস্কার কাজ করা

হয় ১৯৯৬ সালে। তখন বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি

ব্যবহার করে কাবা শরিফের দেয়াল ও

প্রাঙ্গনকে দৃঢ় ও মজবুত করা হয়।

২. কাবার গিলাফের রং পরিবর্তন: কাবা শরীফকে

গিলাফে আবৃত করার প্রচলন শুরু হয় প্রাচীন

জুরহুম গোত্রের মাধ্যমে। পরবর্তী

সময়ে এ ধারা চলমান থাকে। মহানবি (সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাবা ঘরকে একটি সাদা

ইয়েমেনি চাদরে আবৃত করেন। পরবর্তী

খলিফারা কাবা ঘরের গিলাফের ক্ষেত্রে সাদা, লাল

এবং সবুজ রং ব্যবহার করেছেন। আব্বাসি খলিফারা

কালো গিলাফের প্রচলন করেন। এখনো তা

সেই কালো রংয়েই বহাল আছে।

৩. ডিজাইন পরিবর্তন: পবিত্র কাবা ঘর বর্তমানে

ঘনকাকৃতির অবয়বে আছে। পূর্বে হজরত

ইব্রাহিম (আ.) এটিকে এই আকৃতিতে তৈরি

করেননি। ইসলাম পূর্বযুগে কুরাইশরা কাবা

পুনঃনির্মাণ করে। তখন অর্থ সংকটের কারণে

কাবার কিছু অংশ নির্মাণের বাইরে থাকে। এটি মূলত

কাবার আভ্যন্তরীণ অংশ। বর্তমানে এটিকে

একটি ছোট দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

একে হাতিম হিসেবে অভিহিত করা হয়।

৪. কাবার দরজা মূলত কয়টি? কাবার মূল দরজা ছিল দুটি

এবং একটি জানালাও ছিল। বর্তমানে দরজা আছে

একটি। জানালা নেই। তবে কাবার অভ্যন্তরে

আরেকটি দরজা আছে। যা ছাদে যাওয়ার জন্য

ব্যবহৃত হয়।

৫. কাবা ঘরের অভ্যন্তর: কাবা ঘরের

অভ্যন্তরে কী আছে? এ নিয়ে সবার মনেই

প্রশ্ন জাগে। কাবার অভ্যন্তরে তিনটি পিলার মূল

ছাদটিকে ধরে রেখেছে। দুই পিলারের

মাঝে একটি টেবিলে সুগন্ধি রাখা আছে।

দেয়ালের উপরাংশকে একটি সবুজ কাপড়াবৃত

করে রেখেছে। কাপড়টিতে কোরআনের

বিভিন্ন আয়াত ক্যালিগ্রাফি খচিত।

৬. হাজরে আসওয়াদ ভেঙ্গেছিল: হাজরে

আসওয়াদ মূলত একটি বড় পাথর ছিল। তবে

বর্তমানে এটি মোট আটটি পাথরখন্ডের

সমষ্টি। নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাথরটি

ভেঙ্গে গেছে। সর্বপ্রথম এর উপর

রৌপ্যের ফ্রেম বাঁধাই করেন আব্দুল্লাহ বিন

জুবাইর।

৭. কাবার রক্ষক পরিবার কারা? অবাক করা ব্যাপার

হলো- ইসলাম পূর্বযুগ হতে এখন পর্যন্ত একটি

গোত্রই কাবার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন

করছে। গোত্রটির নাম বনু শাইবাহ। বিগত প্রায়

১৫ শতাব্দী ধরে এই গোত্রের হাতেই

আছে কাবা ঘরের চাবি।

৮. কাবা ঘর পরিষ্কার কার্যক্রম: কাবা ঘরের

রক্ষকগোত্র বনু শাইবাহর তত্ত্বাবধানে বছরে

দুইবার কাবা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

জমজম কুয়ার পানি, গোলাপজল এবং আরবের

বিখ্যাত সুগন্ধি উদের তেলের সমন্বয়ে একটি

বিশেষ ক্লিনিং লিকুইড তৈরি করা হয় এবং তা দিয়েই কাবা

ঘর পরিষ্কার করা হয়।

৯. উন্মুক্ত দরজা: কাবার দরজা একসময় সবার জন্যই

উন্মুক্ত ছিল। পরবর্তীতে লোক সমাগম

বেড়ে যাওয়ার কারণে কাবার দরজা বন্ধ করে

দেয়া হয়। বর্তমানেও এটি বিশেষ সময়ে

খোলা হয়ে থাকে।

১০. বিরতিহীন তাওয়াফ: কাবার আরেকটি অবিশ্বাস্য

দিক হলো- সবসময়ই এর চারপাশে তাওয়াফ

চলতে থাকে। শুধু নামাজের জামাত যে

সময়টুকুতে হয়, তা ছাড়া বাকি পুরো সময় ধরে

কাবার চারধারে চলতে থাকে অবিরাম তাওয়াফ।

শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮

মূর্তিপূজারী পিতা ও সম্প্রদায়ের নেতাদের নিকটে ইবরাহীমের দাওয়াত ও তাদের প্রদত্ত জবাবের সার কথাগুলি নিম্নরূপ:

ইবরাহীম (আঃ)-এর দাওয়াত : মূর্তিপূজারী কওমের প্রতি-

সকল নবীর ন্যায় ইবরাহীম (আঃ) স্বীয় কওমকে প্রথমে তাওহীদের দাওয়াত দেন। যেমন আল্লাহ বলেন,

وََإِبْرَاهِيمَ إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاتَّقُوهُ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ، إِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَوْثَاناً وَتَخْلُقُونَ إِفْكاً إِنَّ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقاً فَابْتَغُوا عِندَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ-(العنكبوت ১৬-১৭)-

‘স্মরণ কর ইবরাহীমকে, যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ’। ‘তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করছ, তারা তোমাদের রিযিকের মালিক নয়। কাজেই আল্লাহর নিকটে রিযিক তালাশ কর। তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই নিকটে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’ (আনকাবূত ৩৩/১৬-১৭)

ইবরাহীম (আঃ) উক্ত দাওয়াতের মধ্যে কেবল আল্লাহর স্বীকৃতি কামনা করেননি। বরং স্বীকৃতির ফলাফল (ثمرة الإقرار) আশা করেছিলেন। অর্থাৎ তারা যেন আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে মান্য করে এবং কোন অবস্থায় তা লংঘন না করে। কেননা স্বীকৃতির বিপরীত কাজ করা তা লংঘন করার শামিল।

পিতার প্রতি :

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيْقاً نَّبِيًّا، إِذْ قَالَ لِأَبِيْهِ يَا أَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لاَ يَسْمَعُ وَلاَ يُبْصِرُ وَلاَ يُغْنِي عَنكَ شَيْئاً، يَا أَبَتِ إِنِّي قَدْ جَاءنِيْ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَاتَّبِعْنِيْ أَهْدِكَ صِرَاطاً سَوِيّاً، يَا أَبَتِ لاَ تَعْبُدِ الشَّيْطَانَ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَنِ عَصِيّاً، يَا أَبَتِ إِنِّيْ أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ الرَّحْمَن فَتَكُوْنَ لِلشَّيْطَانِ وَلِيّاً-(مريم ৪১-৪৫)-

‘তুমি এই কিতাবে ইবরাহীমের কথা বর্ণনা কর। নিশ্চয়ই তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও নবী’(১৯/৪১)। ‘যখন তিনি তার পিতাকে বললেন, হে আমার পিতা! তুমি তার পূজা কেন কর, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার কোন উপকারে আসে না?(৪২)। ‘হে আমার পিতা! আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে, যা তোমার কাছে আসেনি। অতএব তুমি আমার অনুসরণ কর। আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব’(৪৩)। ‘হে আমার পিতা! শয়তানের পূজা করো না। নিশ্চয়ই শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য’(৪৪)। ‘হে আমার পিতা! আমি আশংকা করছি যে, দয়াময়ের একটি আযাব তোমাকে স্পর্শ করবে, অতঃপর তুমি শয়তানের বন্ধু হয়ে যাবে’(মারিয়াম ১৯/৪১-৪৫)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيْمُ لأَبِيْهِ آزَرَ أَتَتَّخِذُ أَصْنَاماً آلِهَةً إِنِّيْ أَرَاكَ وَقَوْمَكَ فِيْ ضَلاَلٍ مُّبِيْنٍ- (الأنعام ৭৪)-

‘স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম তার পিতা আযরকে বললেন, তুমি কি প্রতিমা সমূহকে উপাস্য মনে কর? আমি দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ও তোমার সম্প্রদায় স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছ’ (আন‘আম ৬/৭৪)

কিন্তু ইবরাহীমের এই প্রাণভরা আবেদন পিতা আযরের হৃদয় স্পর্শ করল না। রাষ্ট্রের প্রধান পুরোহিত এবং সম্রাটের মন্ত্রী ও প্রিয়পাত্র হওয়ায় সম্ভবত: বিষয়টি তার প্রেস্টিজ ইস্যু হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, وَإِذَا قِيلَ لَهُ اتَّقِ اللّهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ، ‘যখন তাকে বলা হয়, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার সম্মান তাকে পাপে স্ফীত করে। অতএব তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হ’ল নিকৃষ্টতম ঠিকানা’ (বাক্বারাহ ২/২০৬)। বস্ত্ততঃ অহংকারীদের চরিত্র সর্বত্র ও সর্বযুগে প্রায় একই হয়ে থাকে।

পিতার জবাব :

পুত্রের আকুতিপূর্ণ দাওয়াতের উত্তরে পিতা বলল,قَالَ أَرَاغِبٌ أَنْتَ عَنْ آلِهَتِيْ يَا إِبْرَاهِيْمُ لَئِن لَّمْ تَنْتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ وَاهْجُرْنِيْ مَلِيًّا- (مريم ৪৬)- ‘হে ইবরাহীম! তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, তবে আমি অবশ্যই পাথর মেরে তোমার মাথা চূর্ণ করে দেব। তুমি আমার সম্মুখ হ’তে চিরতরের জন্য দূর হয়ে যাও’(মারিয়াম ১৯/৪৬)

ইবরাহীমের জবাব:

পিতার এই কঠোর ধমকি শুনে পুত্র ইবরাহীম বললেন,

قَالَ سَلاَمٌ عَلَيْكَ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّي إِنَّهُ كَانَ بِي حَفِيّاً، وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَأَدْعُو رَبِّي عَسَى أَلاَّ أَكُونَ بِدُعَاء رَبِّي شَقِيّاً- (مريم ৪৭-৪৮)-

‘তোমার উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক! আমি আমার পালনকর্তার নিকটে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিশ্চয়ই তিনি আমার প্রতি মেহেরবান’। ‘আমি পরিত্যাগ করছি তোমাদেরকে এবং আল্লাহ ব্যতীত যাদের তোমরা পূজা কর তাদেরকে। আমি আমার পালনকর্তাকে আহবান করব। আশা করি আমার পালনকর্তাকে আহবান করে আমি বঞ্চিত হব না’ (মারিয়াম ১৯/৪৭-৪৮)

রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮

ইবরাহীম মূর্তি ভাঙ্গলেন : জ্ঞানীদের ইশারাই যথেষ্ট।

ইবরাহীম মূর্তি ভাঙ্গলেন :

জ্ঞানীদের ইশারাই যথেষ্ট। কিন্তু মানুষ যখন কোন কিছুর প্রতি অন্ধভক্তি পোষণ করে, তখন শত যুক্তিও কোন কাজ দেয় না। ফলে ইবরাহীম ভাবলেন, এমন কিছু একটা করা দরকার, যাতে পুরা সমাজ নড়ে ওঠে ও ওদের মধ্যে হুঁশ ফিরে আসে। সাথে সাথে তাদের মধ্যে তাওহীদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। সেমতে তিনি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় দেবমন্দিরে গিয়ে মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলার সংকল্প করলেন।

ইবরাহীম (আঃ)-এর সম্প্রদায় বছরের একটা বিশেষ দিনে উৎসব পালন করত ও সেখানে নানারূপ অপচয় ও অশোভন কাজ করত। যেমন আজকাল প্রবৃত্তি পূজারী ও বস্ত্তবাদী লোকেরা করে থাকে কথিত সংস্কৃতির নামে। এইসব মেলায় সঙ্গত কারণেই কোন নবীর যোগদান করা সম্ভব নয়। কওমের লোকেরা তাকে উক্ত মেলায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানালো। কিন্তু তিনি অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেন (ছাফফাত ৩৭/৮৯)। অতঃপর তিনি ভাবলেন, আজকের এই সুযোগে আমি ওদের দেবমন্দিরে প্রবেশ করে মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেব। যাতে ওরা ফিরে এসে ওদের মিথ্যা উপাস্যদের অসহায়ত্বের বাস্তব দৃশ্য দেখতে পায়। হয়তবা এতে তাদের অনেকের মধ্যে হুঁশ ফিরবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান জাগ্রত হবে ও শিরক থেকে তওবা করবে।

অতঃপর তিনি দেবালয়ে ঢুকে পড়লেন ও দেব-দেবীদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, (তোমাদের সামনে এত নযর-নেয়ায ও ভোগ-নৈবেদ্য রয়েছে)। অথচ ‘তোমরা তা খাচ্ছ না কেন? কি ব্যাপার তোমরা কথা বলছ না কেন? তারপর তিনি ডান হাতে রাখা (সম্ভবতঃ কুড়াল দিয়ে) ভীষণ জোরে আঘাত করে সবগুলোকে গুঁড়িয়ে দিলেন (ছাফফাত ৩৭/৯১-৯৩)। তবে বড় মূর্তিটাকে পূর্বাবস্থায় রেখে দিলেন, যাতে লোকেরা তার কাছে ফিরে যায় (আম্বিয়া ২১/৫৮)

মেলা শেষে লোকজন ফিরে এল এবং যথারীতি দেবমন্দিরে গিয়ে প্রতিমাগুলির অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে গেল। ‘তারা বলাবলি করতে লাগল, এটা নিশ্চয়ই ইবরাহীমের কাজ হবে। কেননা তাকেই আমরা সবসময় মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে বলতে শুনি। অতঃপর ইবরাহীমকে সেখানে ডেকে আনা হ’ল এবং জিজ্ঞেস করল, أَأَنتَ فَعَلْتَ هَذَا بِآلِهَتِنَا يَا إِبْرَاهِيمُ؟ ‘হে ইবরাহীম! তুমিই কি আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ আচরণ করেছ’? (আম্বিয়া ২১/৬২)

ইবরাহীম বললেন, بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَذَا فَاسْأَلُوهُمْ إِنْ كَانُوا يَنْطِقُوْنَ- ‘বরং এই বড় মূর্তিটাই একাজ করেছে। নইলে এদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তারা কথা বলতে পারে’ (আম্বিয়া ২১/৬৩)। সম্প্রদায়ের নেতারা একথা শুনে লজ্জা পেল এবং মাথা নীচু করে বলল, قَدْ عَلِمْتَ مَا هَؤُلاَء يَنْطِقُوْنَ- ‘তুমি তো জানো যে, এরা কথা বলে না’। ‘তিনি বললেন, قَالَ أَفَتَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَنفَعُكُمْ شَيْئاً وَّلاَ يَضُرُّكُمْ- ‘তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত কর, যা তোমাদের উপকারও করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না’ (আম্বিয়া ২১/৬৫-৬৬)। তিনি আরও বললেন,قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ، وَالله خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ- ‘তোমরা এমন বস্ত্তর পূজা কর, যা তোমরা নিজ হাতে তৈরী কর’? ‘অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে ও তোমাদের কর্মসমূহকে সৃষ্টি করেছেন’ (ছাফফাত ৩৭/৯৫-৯৬)أُفٍّ لَّكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللهِ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ-‘ধিক তোমাদের জন্য এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের পূজা কর, ওদের জন্য। তোমরা কি বুঝ না’? (আম্বিয়া ২১/৬৭)

তারপর যা হবার তাই হ’ল। যিদ ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে সম্প্রদায়ের নেতারা ইবরাহীমকে চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করল। তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, একে আর বাঁচতে দেওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, একে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে মারতে হবে, যেন কেউ এর দলে যেতে সাহস না করে। তারা তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার প্রস্তাব গ্রহণ করল এবং সেটা বাদশাহ নমরূদের কাছে পেশ করল। সম্রাটের মন্ত্রী ও দেশের প্রধান পুরোহিতের ছেলে ইবরাহীম। অতএব তাকে সরাসরি সম্রাটের দরবারে আনা হ’ল।

বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮

আলহামদুল্লিলাহ....আরেকটি জুম্মা সকল! দিলের শ্রেষ্ঠ দিন আবার ঘুরে এসেছে!

আলহামদুলিল্লাহ ... আরেকটি জুম্মা - সকল

দিনের শ্রেষ্ঠ দিনটি আবার ঘুরে এসছে ।

আপনি কি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন

না ? এই দিনটিকে বৃথা নষ্ট হতে দেবেন না

কারণ বহু বরকত ও ফজিলত নিহিত রয়েছে

আজকের দিনটিতে

নিম্নলিখিতি সুন্নাত গুলো আদায় করতে

সচেষ্ট হন : !!►►

১) ফজরের সালাত জামাতে আদায় করুন

(আল-বায়হাকী , সহী আল-আলবানি, ১১১৯)

২) সালাত আল-জুম্মার পূর্বের এবং পরের

করণীয়ঃ

➲ জুম্মার দিন গোসল করা (বুখারী এবং

মুসলিম : # ১৯৫১ এবং # ৯৭৭)

➲ জুম্মার সালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া

(বুখারী এবং মুসলিম : # ৯২৯ এবং ১৯৬৪)

➲ পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা (আল-

তিরমিজি, ৪৯৬)

➲ মনোযোগ সহকারে জুম্মার খুৎবা শোনা

(আল-বুখারী ৯৩৪ এবং মুসলিম ৮৫১)

৩) জুম্মার দিন আপনার দুয়া কবুল হবার সেই

মুহূর্তটির অনুসন্ধান করুন (বুখারী এবং

মুসলিম : # ৯৩৫ এবং # ১৯৬৯)

৪) সূরা কাহাফ তিলাওয়াত (আল-হাকিম,

২/৩৯৯; আল-বায়হাকী, ৩/২৪৯)

৫) আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম উপর দুরদ পাঠ (ইবনে মাজাহ #

১০৮৫ , আবু দাউদ , # ১০৪৭)

বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮

মেয়েদের কপালে টিপ কোথায় থেকে, কিভাবে ব্যবহার শুরু ? ----------

মেয়েদের কপালে টিপ কোথায় থেকে, কিভাবে ব্যবহার শুরু ? ----------

হযরত ইবরাহীম আঃ কে যখন আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য নমরুদ ৮ মাইলপরিমান জায়গা আগুন জ্বালালো , তখন একটা নতুন সমস্যা দেখা দিল।

আগুনের উত্তাপ এতই বেশি ছিল যে তার কাছে পৌছানো যাচ্ছিল না। তাই একটা চরক বানানো হল যার মাধ্যমে ইবরাহীম (আঃ) কে ছুড়ে আগুনে নিক্ষেপ করা যায়।

কিন্তু রহমতের ফেরেশতা রা চরকের একপাশে ভর করে থাকায় চরক ঘুরানো যাচ্ছিল না।

তখন শয়তান নমরুদকে কুবুদ্ধি দিল কিছু নগ্ন মেয়ে(পতিতা) এনে চরকের সামনে বসিয়ে দিতে, কারন এ অবস্থায় ফেরেশতারা থাকতে পারবে না। তাই করা হল এবং ফেরেশতারা চলে গেল, ইবরাহীম (আঃ) কে আগুনে নিক্ষেপ করতে তারা সক্ষম হলেন।

পরবর্তিতে ঐ মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান করা হল এবং তাদের মাথায় তীলক পরানো হল। যেটা এখন আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।

অতএব যারা বলে— মহিলাদের সৌন্দর্য সব জায়গায় এবং এই দোহাই দিয়ে টিপ কে নিজেদের জন্য বৈধ মনে করেন, তারা যুগযুগ ধরে নিজেদের কোন পরিচয় বহন করছেন তা একবার ভেবে দেখবেন ?

পতিতার পরিচয় বোঝানোর জন্য যে টিপ ব্যবহার করা হত, তা আজ আমাদের উপমহাদেশে ফ্যাশন! ওহে! মুসলিম নারীরা, এই সত্য কথাটা জানার পর ও কি আপনি আপনাদের কপালে টিপ পড়বেন??

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সিরাজদ্দৌলাঃ সাবাশ , এই না হলে বাঘের বাচ্চা । দেখিয়ে দে শালা ইংরেজদের... আরও আপডেট চাই...

নবাব সিরাজদ্দৌলার সময় যদি ইন্টারনেট থাকত !


পলাশি যুদ্ধের আগে জনৈক ব্লগারের ব্লগ


এই বেশ ভাল আছি আমরা । নবাব সিরাজদ্দউলা কত আনন্দে ক্ষমতায় আছেন । রাজতন্ত্র থাকার এই এক সুফল । বিরোধী দল , তৃতীয় শক্তি কিচ্ছু নেই । আমাদের নবাবকে নির্বাচন নিয়ে ভাবতে হয়না । মিডিয়াগুলোর হাউকাউ নেই । গনতন্ত্র থাকলে আবার কত ঝামেলা রে বাবা । হরতাল , গাড়ি পোরানো , রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা , গ্রেফতার , টক শো কত কিছু । এসবের কিছুই আমাদের সহ্য করতে হয়না । আমরা ভাল আছি । এই বেশ ভাল আছি । তবে ইদানিং বাংলার আকাশে বাতাশে একটু ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি । জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে তা এখনি প্রকাশ 

করছি না । 


ঘষোটি বেগমঃ কিসের ষড়যন্ত্র ? কিসের আলামত ? এসব ফালতু পোস্ট কেন করেন ? লাস্টের লাইনগুলা মুছেন আর নয় পোস্ট ডিলিট করেন... আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চাইতে অনেক ভাল আছে । যত্তসব ফালতু পোস্ট ।

চিন্তায় আছিঃ দেশ নিয়ে খুব টেনশনে থাকি । আচ্ছা ষড়যন্ত্র কোন ধরনের ? কোন লিংক দিতে পারবেন ?

--------------------------------------------------------


যুদ্ধ শুরু হয়ার পরঃ


সকল জল্পনা –কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পলাশীর প্রান্তের মারমার কাটকাট যুদ্ধ শুরু হয়েছে । ইংরেজ বনাম আমরা । ফিল্ড কন্ডিশন (যুদ্ধের ময়দান) দেখে মনে হচ্ছে আমরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে যাচ্ছি । একে তো হোম গ্রাউন্ডের সুবিধা তার উপরে আমাদের দলের অবস্থাও ভাল । অভিজ্ঞ যোদ্ধাদের পাশাপাশি উদীয়মান তরুণদের এবার দলে রাখা হয়েছে । এমনকি আমাদের ঘোড়াগুলো দেশের জন্য জান দিয়ে দিতে প্রস্তুত..


সিরাজদ্দৌলাঃ সাবাশ , এই না হলে বাঘের বাচ্চা । দেখিয়ে দে শালা ইংরেজদের... আরও আপডেট চাই 


মীর জাফরঃ মদন ভাই এগিয়ে চল আমরা আছি তোমার সাথে । +++ ফেবুতে শেয়ার দিলাম 


জনৈক ব্লগারঃ অনলাইনে টাকা আয় করতে ক্লিক করুন এখানে । wwwwwww. নবাবের কামাই. কম

==================================


অনলাইন সংবাদ মধ্যমের খবরঃ


পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ শুরুঃ মীরজাফরের সাথে ইংরেজদের গোপন সন্ধির আভাস


ডেস্ক রিপোর্টঃ অল্প কিছুক্ষন আগে পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজুদ্দলার সেনাবাহিনীর সাথে ইংরেজ বনিকদের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সুত্রপাত হয়েছে । পলাশীর ময়দান থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানিয়েছেন নবাবের বাহিনী অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী থাকায় এই যুদ্ধে নবাবের জয়ের সম্ভাবনা বেশী । তবে এক অনুসন্ধানী তদন্তে নবাবের সেনাপতি মীরজাফরের সাথে ইংরেজ বনিকদের গোপন সন্ধির আভাস পাওয়া গেছে । এ ব্যাপারে গতকাল রাতে মীরজাফরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টিকে ভিত্তিহীন গুজব বলে উড়িয়ে দেন । তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তার সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করে হলে তার ফোন বারবার বন্ধ পাওয়া যায় । পরে তার এপিএসের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এপিএসের মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায় ।এই ষড়যন্ত্রের সাথে সিরাজদ্দৌলার আপন খালার সম্পৃক্ততা থাকার আভাস পাওয়া গেছে ।


এদিকে যুদ্ধ শুরু হয়ার পরপরি দেশের পুজিবাজারে সুচকের ব্যাপক পতনের ঘটনা ঘটেছে । হাজার হাজার বিনিয়োগকারী বরতমানে পুজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার অফিসের সামনে বিক্ষোভরত আছেন ।

Nobabnews24.beshi


--------------------------------------------------------

ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ? আসুন দেখি...


ফেসবুক পেজ ‘নাই কাজ তো খই ভাজ’ এর ছবি আপলোড

আমাদের নবাব সিরাজুদ্দউলার ছবি । how many like for this nobab ?


1023 people like this photo . 244 people share this


ভবের পাগলঃ আসেন ভাইয়েরা আমরা আমাদের প্রোফাইল পিকচার বদলে নবাবের ছবি লাগাই । দেশপ্রেম দেখানোর এটাই সবচাইতে ভাল উপায়...

--------------------------------------------------------

Smart Boy Upload a video:

পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের সর্বশেষ xclusive video দেখে নিন এই খানে ক্লিক করে ।


যুদ্ধ যখন শেষের পর্যায়েঃ


আমরা আজ এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন । পলাশীর যুদ্ধে আমরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছি । মীরজাফরের বেঈমানিতে আজ আমাদের এই অবস্থা । মানুষকে বিশ্বাস করা বড় কঠিন । মীরজাফরকে বিশ্বাস করে আমি বড় ভুল করে ফেলেছি । আমার আপন খালা ঘোষটি বেগমও এই ঘৃণ্য কাজে জড়িত । তারা বুঝতে পারলনা তারা কত বড় ভুল করেছে । বাংলার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা । কে আমাকে আশা দেবে কে আমাকে ভরসা দেবে ?


ঘোষটি বেগমঃ নবাব এইসব পোস্টে আর কোন কাজ হবে না । এই ব্লগও আমি দখল করে ফেলেছি আমি এখন এখানকার মডু । তোমার এই পোস্ট ডিলিট করে এই ব্লগে তোমাকে আজিবনের জন্য ব্যান করা হবে । মু হা হা হা হা...


জনৈক ব্লগারঃ অনলাইনে টাকা আয় করতে ক্লিক করুন এখানে । www.সুন্দর বন আর সুন্দর মন

2টাই এখন দংশের পথে.com


লর্ড ক্লাইভ: মীরজাফর কুব বাল চেলে, আমার কুব পচন্দ অয়েছে । টু গুড...

শনিবার, ১৬ জুন, ২০১৮

আর্জেন্টিনার হয়ে ঝড় তুলতে প্রস্তুত ৫ তারকা



রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে শক্তিশালী আর্জেন্টিনা। এ ম্যাচে বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ছাড়াও ঝড় তুলতে প্রস্তুত তার বিখ্যাত কয়েকজন সতীর্থ। তারা হলেন, গঞ্জালো হিগুয়াইন, আগুয়েরা, পাওলো দিবালা এবং অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া।


এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মত ভয়ঙ্কর আক্রমণভাগ সাজাতে পারবে না কেউ। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে এতটা শক্তিশালী আক্রমণভাগ সামলাতে হিমশিম খেতে হবে আইসল্যান্ডকে।


বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ শক্তিশালী থাকলেও এবার সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। আর এই তারকার প্রত্যেকেই তাদের ক্লাবের অন্যতম মুখ।


বার্সেলোনার হয়ে ৫৪ ম্যাচে ৪৫ গোল করেছেন মেসি এছাড়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকে প্রায় ছিটকে পড়া আর্জেন্টিনাকে হ্যাটট্রিক গোলের জয় দিয়ে একাই নিয়ে এসেছেন রাশিয়ায়। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রধান স্ট্রাইকার হয়ে উঠেছেন আগুয়েরা। আর জুভেন্তাসের প্রাণভোমরা হিগুয়াইন। এবার জুভেন্তাসের ইতালি সেরা হওয়ার পেছনে বড় অবদান রয়েছে হিগুয়াইনের। আর তার সঙ্গে একই ক্লাবে খেলছেন আর্জেন্টার অন্যতম আরেক খেলোয়াড় দিবালা। জুভেন্তাসের হয়ে এই মৌসুমে ৪৮ ম্যাচে ২৬ গোল করেছেন দিবালা।


তবে একসঙ্গে এই চার খেলোয়াড়কে মাঠে নামাবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টিনার কোচ হর্হে সাম্পাওলি। তিনি জানিয়েছেন, শনিবারের ম্যাচে আগুয়েরাকে দিয়ে শুরু করতে চান তিনি। সেটি হলে হিগুয়াইনকে সাইড বেঞ্চে থাকতে হবে। এছাড়া দিবালার পরিবর্তে মেসির পাশে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াকে রাখতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন কোচ।


ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে আর্জেন্টিনা রয়েছে ৫নম্বরে আর আইসল্যান্ড ২২ এ। তবে মাঠের খেলায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে যে কেউই। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় মস্কোতে শুরু হবে ম্যাচটি

শুক্রবার, ৮ জুন, ২০১৮


বিবাহিত পুরুষ, বিবাহীতা নারী বৈধভাবে দৈহিক চাহিদা মেটানোর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি অবৈধ পথ অবলম্বন করে তবে আল্লাহর বিধানে তার শাস্তি হল পাথর মেরে হত্যা। যাকে আরবীতে বলা হয় "রজম"। আর অবিবাহিত হলে ১০০ দোররা। এই সব বিষয়ে নাস্তিকরা আবার খুবই মানবতাবাদী কেননা "স্বাধীনতা, স্বাধীনতা" বলে তারা ফোকর খুঁজে সব অপকর্ম করার। যাই হোক আমি কখনো কখনো ভাবি (আল্লাহ তায়ালার সকল হুকুম এক বাক্যে মেনে নেয়ার পর) যে দয়াময় রাহমানুর রাহীম কেন এত কঠিন শাস্তির বিধান করলেন? আবার এই বিধানের শেষে বলেও দিলেন "আল্লাহর হুকুম পালনে তোমাদের অন্তরে যেন দয়ার্দ্রতা স্পর্শ না করে"। 

 বিধানটি আপনার কাছে কঠিন মনে হতে পারে কিন্তু আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা অসীম জ্ঞানী, তিনি কখনো ভুল করেন না, তার সিদ্ধান্তই সঠিক ও পরিপূর্ণ এবং মানবজাতির জন্য কল্যাণকর।


 অবৈধ যৌন সম্পর্কের কারণে স্বামী-স্ত্রীর ডিভোর্স, ডাস্টবিনে হাজারো বনী আদমের লাশ, লাখো লাখো মানুষ এইডস আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, কখনো নিজের শিশু সন্তান হত্যা করা হচ্ছে, ইউরোপ আমেরিকার আদালতগুলোতে হাজারো খুন সংক্রান্ত কেইস আছে- যার নথিপত্র ঘাটলে খুনের নেপথ্য কারণ বেরিয়ে আসবে কোন না কোন অবৈধ যৌন সম্পর্ক। আপনি হিসাব করে বের করতে পারবেন "এই বিধান প্রয়োগ করলে হয়ত ১০০ জন মারা যেত এবং সমাজে এই ধরণের অপরাধ ৯৯% কমে যেত কিন্তু এই বিধান প্রয়োগ না করে ৫০০ জন মারা যাচ্ছে এবং সমাজে দিন দিন অপরাধ বেড়েই চলেছে। 


 আরো একটি বিষয় আছে যা কেবল ঈমানদারদেরই বোধগম্য হবে তা হল এই যে "আল্লাহর বিধান প্রয়োগে যদি কাউকে হত্যা করা হয় তবে তার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়"। যেমন একবার এক মহিলাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা হল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন আল্লাহ তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং সে এখন জান্নাতে। ঠিক যেমন আপনি আপনার বাচ্চাকে শাস্তি দিয়ে তারপর আবার আদর করেন, মন আবেগে আপ্লুত হয়। 


 অন্য একটি হাদীসে আছে যে কোন অপরাধের শাস্তি যদি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী দুনিয়াতে প্রয়োগ হয় তবে সেটার জন্য আখেরাতে আর কোন শাস্তি হবে না ইনশাআল্লাহ। আর এটা তো সত্যি যে পরকালে শত শত বছর ধরে জাহান্নামে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হওয়ার চেয়ে দুনিয়ার শাস্তি অনেক ভাল। সরকার অবৈধ সম্পর্কের কারণে শাস্তি না দিলে সেই শাস্তি পরকালের জন্য জমা থাকবে, দুনিয়ার শাস্তিটা পরকালে ভয়াবহ এক শাস্তিতে রুপান্তরিত হবে। 


 So paying in duniya is better than paying in akherat. 

 lets fear Allah and refrain ourselves from doing sin.

 We will be judged one day. 


 আস্তগাফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি যাম্বিও ওয়া আতুবু ইলাইহি, লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যীল আজীম। 


 আমি আমার রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি সকল গোনাহ থেকে এবং তওবা করছি, নিশ্চয় ইবাদতে মনোযোগী ও গোনাহ থেকে বেচে থাকা আল্লাহর তাওফীক ছাড়া সম্ভব নয়।

সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮

চেয়ারে বসে নামায পড়া জায়েয আছে কি? এক নজরে দেখেনেই কুরআন হাদিস কি ভলে।লিখছেনঃ রাকিব ইসলাম rakibislam32@yaho.com


চেয়ারে বসে নামায পড়া জায়েয আছে কি?

এক নজরে দেখেনেই কুরআন হাদিস কি ভলে।





সংগ্রহঃ কবর কি? পহেলা রাত বা কবে প্রথম রজনী!এবং সংস্কারকবৃন্দদ পেইজ।

জনসার্থে হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার।প্লিজ


বর্তমানে প্রায় মসজিদেই অনেক মুসল্লীকে চেয়ারে বসে নামায আদায় করতে দেখা যায়। কিন্তু শরীয়তের বিধান অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামায আদায় করাটা সঠিক হচ্ছে কিনা সেটা অনেকেই জানেন না।


এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, বর্তমানে যারা চেয়ারে নামায পড়ছেন, তাদের অনেকেরই উজর-সমস্যা এতই সাধারণ যে, এ ধরনের সমস্যার কারণে চেয়ারে বসে নামায আদায় করাটা বৈধ হয় না। ফলে তাদের চেয়ারে বসে পড়া নামায আদায় হচ্ছে না। একটু কষ্ট করে চেয়ার ছাড়াই তারা নামায আদায় করতে পারেন। কিন্তু তারা সেটা না করে একটু আরামের জন্য চেয়ারে বসেই নামায আদায় করে যাচ্ছেন। এতে নামায আদায় করা সত্ত্বেও নামায শুদ্ধ না হওয়ার কারণে তারা গুনাহগার হচ্ছেন।


এজন্য নিজের উজরের অবস্হা প্রকাশ করে এ সংক্রান্ত মাসআলা বিজ্ঞ মুফতীগণের নিকট থেকে জেনে নেয়া একান্ত জরুরী। যাতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামায সহীহ-শুদ্ধ হয়। বক্ষমান নিবন্ধে সংক্ষেপে বিষয়টি আলোচনা করার প্রয়াস পাব।


কিয়াম তথা দাঁড়ানো নামাযের একটি ফরজ রুকন। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-


حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَىٰ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِين


“তোমরা নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষতঃ মধ্যবর্তী নামাযের প্রতি এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তোমরা বিনীতভাবে দাঁড়াও।”


(সূরাহ বাকারা, আয়াত নং ২৩৮)


এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেন, এখানে নামাযে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে। (বাদায়িউস সানায়ি‘, ১ম খণ্ড, ২৮৭ পৃষ্ঠা)


তাই দাঁড়াতে সক্ষম হলে, ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্‌ নামায দাঁড়িয়েই আদায় করতে হবে। এ সকল নামায বসে আদায় করলে, সহীহ হবে না।


(ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৫ পৃষ্ঠা)

সংগ্রহঃ মৃত্যুর দুয়ারে দাড়িয়েও ভলবো তোমাকে ভালবাসি!এবং সংস্কারকবৃন্দ গ্রুপ।

জনসার্থেঃ হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার প্লিজ।


অবশ্য নফল নামায দাঁড়াতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও বসে আদায় করা জায়িয আছে। তবে তাতে দাঁড়ানোর তুলনায় অর্ধেক সাওয়াব হবে।


(ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৫ পৃষ্ঠা)


চুইটারঃ নিষ্ঠুর প্রেমঃ এবং সংস্কারকবৃন্দ পেইজ। জনসার্থেঃ হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার প্লিজ।


বিষয়টি একটি হাদীসে সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। হাদীসটি নিম্নরূপ–


عن عِمرانَ بنِ حُصَينٍ رضيَ اللهُ عنه، قال: سألتُ النبيَّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم عن صلاةِ الرَّجلِ وهو قاعدٌ، فقال: مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ ، وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَائِمِ

হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বসে নামায আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, “কেউ যদি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করে, তাহলে তা তার জন্য উত্তম। আর বসে নামায আদায় করলে সে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করার অর্ধেক সাওয়াব পাবে।”


(সহীহ বুখারী, ১ম খণ্ড, ১৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ১০৬৪/ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৫/ জামি‘ তিরমিযী, ১ম খণ্ড, ৮৫ পৃষ্ঠা)


এ হাদীসটি নফল নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ, দাঁড়াতে সক্ষম হলে, ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাতের মুআক্কাদাহ নামায বসে আদায় করা জায়িয নয়। তাই ইমাম তিরমিযী (রহ.) জামি‘ তিরমিযীতে হাদীসটি উল্লেখ করার পর লিখেছেন, “কতক আলেম এই হাদীসটির মর্ম সম্পর্কে বলেছেন, এটি নফলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ.) বলেন, কেউ কোনো অসুস্হতা বা উজরের কারণে বসে নফল নামায আদায় করলে, সে দাঁড়িয়ে নামায আদায়ের সমান সাওয়াবই পাবে। এ সম্পর্কে হাদীসের বর্ণনা রয়েছে।”


(দ্রষ্টব্য : জামি‘ তিরমিযী, ১ম খণ্ড, ৮৫ পৃষ্ঠা)


অবশ্য দাঁড়াতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও নফল নামায বসে পড়লে, জমিনে বসেই পড়তে হবে। চেয়ারে বসে পড়লে নামায সহীহ হবে না। জমিনে বসে হাঁটু বরাবর মাথা ঝুঁকিয়ে রুকু করতে হবে। সিজদা করতে সক্ষম হলে, জমিনেই সিজদা করতে হবে।


(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া, ১ম খণ্ড, ১৭১ পৃষ্ঠা)


যিনি দাঁড়াতে সক্ষম, কিন্তু নিয়মমত রুকু-সিজদা করতে অক্ষম, রুকু-সিজদা করতে মারাত্মক কষ্ট হয় বা রোগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অথবা রোগ সারতে বিলম্ব হবে, এ ধরনের লোক দাঁড়িয়ে ইশারায় রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করবেন। জমিনে বা চেয়ারে বসে নামায আদায় করলে নামায সহীহ হবে না। কারণ, নামাযে কিয়াম বা দাঁড়ানো একটি ফরজ। অপারগতা ছাড়া তা বাদ দিলে নামায সহীহ হবে না।


(বাদায়ি‘উস সানায়ি‘, ১ম খণ্ড, ১০৭ পৃষ্ঠা/ মাজমা‘উল আনহুর, ১ম খণ্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা/ তাবইনুল হাকায়িক, ১ম খণ্ড, ৪৯২ পৃষ্ঠা)


সংগ্রহঃ কেন তুমি এতোটা নিষ্ঠুর হলে? এবং সংস্কারকবৃন্দ পেইজ।

জনসার্থেঃ হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার প্লিজ।


কেউ যদি কোনো কিছুর উপর ভর করে বা হেলান দিয়ে কিংবা টেক লাগিয়ে দাঁড়াতে পারেন, সরাসরি দাঁড়াতে পারেন না, তাহলে তিনি কিছুর উপর ভর করে বা টেক লাগিয়ে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবেন। জমিনে বা চেয়ারে বসে ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নাতে মুআক্কাদাহ নামায আদায় করলে সহীহ হবে না।


(ফাতহুল কাদীর, ২খণ্ড, ৩৩ পৃষ্ঠা/ ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৭ পৃষ্ঠা)


ইনষ্টাগ্রামেঃ Rakib islam2653

জনসার্থেঃ হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার প্লিজ।


যিনি কিছুক্ষণ দাঁড়াতে পারেন, বেশী সময় দাঁড়াতে পারেন না এবং জমিনে বসতে সক্ষম, তিনি দাঁড়িয়ে নামায শুরু করবেন। যতক্ষণ সম্ভব দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবেন। যখন কষ্ট হবে, জমিনে বসে বাকি নামায আদায় করবেন। রুকু-সিজদা নিয়মমতো করবেন। এমতাবস্হায় চেয়ারে বসে নামায আদায় করলে নামায সহীহ হবে না। যেমন, একজন মানুষ দীর্ঘ সময় দাঁড়াতে পারেন না, ফজরের নামাযে দীর্ঘ কিরাআত পড়া হয়, তিনি যদি জামা‘আতে ফজরের নামায আদায় করেন, তাহলে দাঁড়িয়ে শুরু করবেন। যতক্ষণ সম্ভব দাঁড়াবেন। যখন কষ্ট হবে, জমিনে বসে পড়বেন। তিনি চেয়ারে বসে নামায আদায় করতে পারবেন না।


(ফাতহুল কাদীর, ২য় খণ্ড, ৩৩ পৃষ্ঠা/ ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৭পৃষ্ঠা)


যারা দাঁড়াতে এবং রুকু-সিজদা করতে অক্ষম, কিন্তু জমিনে যেকোনোভাবে বসতে সক্ষম, তারা তাদের পক্ষে যেভাবে সম্ভব সেভাবে জমিনে বসেই নামায আদায় করবেন। এ অবস্হায় চেয়ারে বসে আদায় করলে নামায সহীহ হবে না। জমিনে বসে তারা ইশারায় রুকু-সিজদা করবেন। হাঁটু বরাবর মাথা ঝুঁকিয়ে ইশারায় রুকু এবং আরেকটু বেশী ঝুঁকিয়ে সিজদা করতে হবে।


(বাদায়ি‘উস সানায়ি‘, ১ম খণ্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)


এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-


الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَٰذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

যারা (বুদ্ধিমানরা) দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে এবং বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তা অনর্থক সৃষ্টি করেননি। আপনি পবিত্র। আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।”


(সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত নং ১৯১)


আল্লামা কুরতুবী (রহ.) বলেন, হযরত হাসান বসরীসহ আরো কয়েকজন মুফাসসির বলেছেন, “আয়াতটি নামায সম্পর্কে। অর্থাৎ (বুদ্ধিমান তারা) যারা নামায নষ্ট করে না। উজর হলে বসে বা শুয়ে হলেও নামায আদায় করে। সুতরাং আয়াত থেকে জানা গেল, নামায দাঁড়িয়ে আদায় করতে হবে। দাঁড়াতে সক্ষম না হলে বসে এবং তাও সম্ভব না হলে শুয়ে নামায আদায় করতে হবে।”


(তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ১৯৮ পৃষ্ঠা)


মাবসূতে সারাখসিতে রয়েছে, অসুস্হ ব্যক্তির নামাযের ব্যাপারে মূলনীতি হচ্ছে এ আয়াত-“যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে।” (সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত নং ১৯১)


এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে ইমাম যাহহাক (রহ.) বলেন, “আয়াতটি হচ্ছে অসুস্হ ব্যক্তির সামর্থ অনুযায়ী নামায আদায়ের বিবরণ।”


(মাবসূতে সারাখসি, ১ খণ্ড, ২১২ পৃষ্ঠা)


একটি হাদীসে বিষয়টির সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যায়। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে অসুস্হ ব্যক্তির নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন,“দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবে। তা সম্ভব না হলে বসে আদায় করবে। তাও সম্ভব না হলে শুয়ে নামায আদায় করবে।”


(সহীহ বুখারী, ১ম খণ্ড, ১৫০ পৃষ্ঠা/ জামি‘ তিরমিযী, ১ম খণ্ড, ৮৫ পৃষ্ঠা)


পোষ্ট বায়ঃ #আধার_কালো_রাতের_চাঁদঃ এবং সংস্কারকবৃন্দ গ্রুপ।

জনসার্থেঃ হাদিসটা কপি কিনবা সেয়ার প্লিজ।


এ হাদীস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো, দাঁড়ানো সম্ভব না হলে, তখনই কেবল বসে নামায আদায় করা যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়ানো সম্ভব, ততক্ষণ জমিনে বা চেয়ারে বসে নামায আদায় করলে সহীহ হবে না। আবার যখন যমিনে বসে নামায আদায় করা সম্ভব, তখন শুয়ে বা চেয়ারে বসে নামায আদায় করলে, তা সহীহ হবে না।


যিনি জমিনে স্বাভাবিকভাবে বসতে পারেন না, তবে অন্য কোনভাবে বসতে পারেন, যেমন, কোনকিছুর সাথে টেক লাগিয়ে বসতে পারেন, তিনি সেভাবেই জমিনে বসে নামায আদায় করবেন। তিনি চেয়ারে বসে আদায় করলে, নামায সহীহ হবে না।


(ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৫ পৃষ্ঠা)


হাঁটুতে সমস্যার কারণে অনেকে হাঁটু ভাঁজ করতে পারেন না। এ ধরনের লোকের পক্ষে যদি পশ্চিম দিকে পা ছড়িয়ে জমিনে বসা সম্ভব হয়, তাহলে তারা সেভাবেই জমিনে বসে নামায আদায় করবেন। এমনি করে যে কোনভাবে জমিনে বসে নামায পড়তে সক্ষম হলে, তার জন্য সেভাবেই জমিনে বসে নামায আদায় করতে হবে। এ অবস্হায় তার জন্য চেয়ারে নামায পড়া জায়িয হবে না।


আর যদি কেউ কোনোভাবেই বসতে না পারেন, তাহলে তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে নামায আদায় করবেন। তিনি পশ্চিমদিকে পা ছড়িয়ে দিবেন। ইশারায় রুকু-সিজদা করবেন। যদি সম্ভব হয়, তাহলে পশ্চিম দিকে পা না দিয়ে বরং হাঁটু খাড়া রাখবেন এবং মাথার নীচে বালিশ দিয়ে দিবেন, যাতে অন্তত কিছুটা বসার মতো হয় এবং চেহারা আকাশের দিকে না হয়ে কিবলামুখী হয়।


(ফাতাওয়া শামী, ২য় খণ্ড, ৫৬৯ পৃষ্ঠা)


তবে এই শেষাক্ত ক্ষেত্রে অর্থাৎ যদি কোনভাবেই জমিনে বসা সম্ভব না হয় বা কোনোভাবেই তারা জমিনে বসতে না পারেন, তাহলে তখন শুয়ে নামায পড়ার পরিবর্তে চেয়ারে বসে নামায আদায় করতে পারবেন। তখন চেয়ারে বসে ইশারায় রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করবেন। সিজদার জন্য রুকুর তুলনায় অধিক মাথা ঝুঁকাতে হবে।


কিন্তু আমাদের দেশে যে সামান্য উজরেই অনেকে চেয়ারে বসে নামায পড়ছেন, তা সহীহ হচ্ছে না। বিশেষ করে তাদের দ্বারা মসজিদে ব্যাপকহারে চেয়ার ব্যবহারের দ্বারা নানারূপ অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই ক্ষেত্রে সকলের সচেতন হওয়া কর্তব্য।

সংগ্রহঃ কেন তুমি এতোটা নিষ্ঠুর হলে? এবং সংস্কারকবৃন্দ গ্রুপ।

---------------------------ধন্যবান্তে_______________

                             Rakib Islam

বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮

২২ ঘণ্টা রোজা রাখবে যে দেশের মুসলমান






আর মাত্র 1 দিন। এরপরই শুরু হচ্ছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র মাস ‘মাহে রমজান’। একেক দেশে রোজা রাখার সময়ও কিন্তু ভিন্ন। কখনো কী ভেবেছেন পৃথিবীর অপর প্রান্তের দেশগুলোতে রোজা রাখার সময় কীরকম।


ইউরোপের ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র আইসল্যান্ডের কথা বলি। যেখানে দিনের মধ্যে বাইশ ঘন্টাই দিন। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী সে দেশটির মুসলিম নাগরিকদের এবার ২২ঘন্টাই রোজা রাখতে হবে। প্রায় একহাজার মুসলমানের একধরণের অসাধ্যই সাধন করতে হবে এমন চমকপ্রদ তথ্যই বেরিয়ে এসেছে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপর।


এরফলে খাওয়াদাওয়া ও বিশ্রাম বাবদ কেবলমাত্র দুই ঘন্টাই সময় পাবে এবার আইসল্যান্ডের নাগরিকরা। সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার কারণে এ মাসে একবেলা খেয়ে কাটাতে হবে দেশটির নাগরিকদের। অপরদিকে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের মাত্র নয় ঘন্টার জন্য পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে বলেও জানা গেছে। নিউইয়র্ক টাইমস

সোমবার, ১৪ মে, ২০১৮

আমার ওয়েবছাইটঃwww.koborki.blogspot.com


রাতে বা ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান? তাহলে অবশ্যই পড়ুন!


ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান- যারা রাতে বা ভোরে বাথরুমে যাবার জন্য ঘুম থেকে ওঠেন তাদের জন্য ডাক্তারদের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। অবশ্যই পড়ুন।


আমরা প্রায়ই শুনতে পাই একেবারে সুস্থ একজন মানুষ রাতের বেলা হঠাৎ মারা গেছেন। এটার একটা কারন হচ্ছে রাতে বাথরুমে যাবার জন্য ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমরা তাড়াহুড়ো করে হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে পড়ি যা ব্রেইনে রক্তের প্রবাহ হঠাত কমিয়ে দেয়। এটা আপনার ইসিজি প্যাটার্নও বদলে দেয়।


হুট করে ঘুম থেকে উঠেই দাঁড়িয়ে পড়ার দরুন আপনার ব্রেইনে সঠিক ভাবে অক্সিজেন পৌছাতে পারেনা, যার ফলে হতে পারে হার্ট এ্যাটাকের মত ঘটনাও।


ডাক্তাররা ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাবার আগে সবাইকে ‘দেড় মিনিট’ সময় নেয়ার একটি ফর্মুলা দিয়েছেন।


এই দেড় মিনিট সময় নেয়াটা জরুরি কারন এটা কমিয়ে আনবে আপনার আকস্মিক মৃত্যুর সম্ভাবনা। হঠাৎ এই উঠে পড়ার সময়ে এই দেড় মিনিটের ফর্মুলা বাঁচিয়ে দিতে পারে আমাদের জীবন।


১। যখন ঘুম থেকে উঠবেন, হুট করে না উঠে মিনিমাম তিরিশ সেকেন্ড বিছানায় শুয়ে থাকুন।


২। এরপর উঠে বিছানায় বসে থাকুন তিরিশ সেকেন্ড।


৩। শেষ তিরিশ সেকেন্ড বিছানা থেকে পা নামিয়ে বসুন।


এই দেড় মিনিটের কাজ শেষ হবার পর আপনার ব্রেইনে পর্যাপ্ত পরিমানে অক্সিজেন পৌছাবে যা আপনার হার্ট এ্যাটার্ক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি একদম কমিয়ে আনবে।


খুবই গুরুত্বপুর্ন এই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যটি ছড়িয়ে দিন আপনার পরিবার,বন্ধু এবং পরিচিত লোকজনের মাঝে। নিজে এই ফর্মুলাটি মেনে চলুন এবং অন্যদেরকেও মানতে বলুন।


মনে রাখবেন যেকোন বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সাবধান থাকতে হবে সবাইকেই।

রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮


যে কারণে কাবা শরীফের উপর দিয়ে আজ পর্যন্ত দুনিয়ার কোন পাখি ও বিমান উড়ে যেতে পারেনি?



কাবা শরীফের উপর দিয়ে- কাবা শরীফ এমন একটা জায়গা যার উপর দিয়ে আজ পর্যন্ত কোন পাখি উড়ে যায়নি, দুনিয়া কোন বিমানও তার উপর দিয়ে যেতে পারেনি।


কুদরতী দৃষ্টিকোণ থেকেও তার অবস্থান এমনই যে, তার উপর চন্দ্র ও সূর্যও অবস্থান করতে পারে না। কুরআন এবং বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে,গোটা পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু ঐ স্থান যেখানে খানায়ে কা’বা শরীফ ।মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এ এক বিষ্ময়কর সৃষ্টি।


মুসলমানদের কেবলা কাবা শরীফ। প্রতিবছর লাখ লাখ মুসলমান কাবাঘর তাওয়াফ করতে মক্কা গমন করেন। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে ফেরেশতারা কাবাঘর নির্মাণ করেন।


কাবাঘরকে উল্লেখ করে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা আল-ইমরানের ৯৬ আয়াতে বলেন, “নিশ্চই সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের ইবাদত রূপে নিরূপিত হয়েছে, তা ঐ ঘর যা মক্কাতে অবস্থিত”।


কাবাঘরটি আল্লাহ তায়ালার আরশে মুয়ালস্নাহর ছায়াতলে সোজাসুজি বাইতুল মামুরের আকৃতি অনুসারে স্থাপন করেন। হযরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) উভয়ই আল্লাহ তায়ালার কাছে ইবাদতের জন্য একটি মসজিদের পার্থনা করেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের দোয়া কবুল করেন এবং বাইতুল মামুরের আকৃতিতে পবিত্র কাবাঘর স্থাপন করেন।


এখানে হযরত আদম (আঃ) সন্তুষ্টচিত্তে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করতে থাকেন (শোয়াব-উল-ঈমান, হাদিসগ্রন্থ) এর অনেক তফসিরবিদের মতে, মানব সৃষ্টির বহু আগে মহান আল্লাহ তায়ালা কাবাঘর সৃষ্টি করেন”।


হফসিরবিদ মজাহিদ কলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাইতুলল্লাহর স্থানকে সমগ্র ভুপৃষ্ঠ থেকে দু’হাজার বছর আগে সৃষ্টি করেন” মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে হযরত আবুযর গিফারী হতে বর্ণনা হয়েছে, রাসূল (সঃ) তার একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন,


“বিশ্বের সর্বপ্রথম মসজিদ হলো মসজিদে হারাম। এরপরের মসজিদ হলো মসজিদে আকসা। মসজিদে হারাম নির্মাণে ৪০ বছর পর মসজিদে আকসা নির্মিত হয়”।

বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮

অনেকেই জানেন না যে কারণে চুরি হয়ে যায় বজ্রপাতে নিহতদের মৃতদেহ, জানলে আতকে উঠবেন! সংগ্রহঃ #আধার_কালো_রাতের_চাঁদঃ


অনেকেই জানেন না যে কারণে চুরি হয়ে যায় বজ্রপাতে নিহতদের মৃতদেহ, জানলে আতকে উঠবেন!


#আধার_কালো_রাতের_চাঁদঃ



বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। আর চলতি মে মাসের প্রথম কয়েকদিনেও মৃত্যুর খবর এসেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। বজ্রপাতে গতকাল রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোট পাঁচ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।ঝড় ও বৃষ্টির সময় বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় যেমন আতঙ্ক বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃতদেহ চুরির আতঙ্ক।


রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় গত সপ্তাহে বজ্রপাতে মারা যায় স্থানীয় যুবক মতিন মণ্ডল। কিন্তু তাকে কবর দেয়ার পর মৃতদেহ চুরি হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় রাত জেগে কবর পাহারা দেয় তার পরিবারের স্বজন ও আশে-পাশের অন্যান্যরা।এ নিয়ে তাদের মধ্যে এতটাই আতঙ্ক তৈরি হয় যে পরদিনই তারা কবরটি সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে ফেলে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা হাসিনা বেগম বলেন, সেখানকার মানুষজনের মধ্যে মৃতদেহ চুরির গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আমরাও খবর পেয়ে লোক পাঠাই। তারা বলে যে এরকম চেষ্টা হয়েছিল। ফলে ওইদিন কবর দিয়েও তারা রাত জেগে পাহারা দিয়েছে। পরের দিন কবরটি পাকা করে ফেলে।


এমন আতঙ্ক কেন জানতে চাইলে ওসি হাসিনা বেগম বলেন, বজ্রপাত হলে লাশ চুম্বক হয়ে যায় বলে এলাকায় মানুষের মাঝে একধরনের রিউমার আছে। এ কারণে অনেকসময় মৃতদেহ চুরির আশঙ্কা দেখা যায়”।


এমনই আরেকটি ঘটনার খবর জানা যায় নাটোরের লালপুর উপজেলায় গত বছরের এপ্রিল মাসের শেষদিকে। বজ্রপাতে নিহত এক যুবকের মৃতদেহ চুরির আশঙ্কায় তার পরিবার তাকে গোরস্থানে কবর না দিয়ে বাড়ির আঙিনার ভেতর গরুর ঘরের পাশে মৃতদেহ কবর দেয়।


লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে একধরনের ‘মিথ’ প্রচলিত আছে।বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় এ ধরনের আতঙ্ক নতুন নয়। কবর থেকে বজ্রপাতে নিহত নারী কিংবা পুরুষের মরদেহের কঙ্কাল চুরি যাওয়ার খবর পত্র-পত্রিকাতেও এসেছে।


বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে বজ্রপাতে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। বছরের এ সময়টিতে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে বজ্রপাতও হচ্ছে ব্যাপকভাবে।কিন্তু এভাবে মৃতদেহ চুরির পেছনে কী কারণ রয়েছে?


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, “এর পেছনে কারণ একধরনের মিথ্যা বিশ্বাস।”সোহেল মাহমুদ বলেন, “অনেকেই মনে করেন, বজ্রপাতে নিহত মানুষের শরীরে মূল্যবান জিনিস তৈরি হয়। তারা হয়তো ধারণা করে লোহার ভেতর দিয়ে ইলেক্ট্রিসিটি পাস হলে (প্রবাহিত হলে) যেভাবে লোহা চুম্বক হয়ে যায়, এক্ষেত্রেও সেরকম কোনকিছু হয়। কিন্তু এটা তো পুরোটাই অন্ধবিশ্বাস।”


এসব কারণেই অনেকসময় মানুষ মৃতদেহ চুরির চেষ্টা করে।গ্রাম্য অনেক কবিরাজ বা ওঝা’র ঝাড়ফুঁক কাজের জন্য এই ধরনের মৃতদেহের হাড়-গোড় দরকার মনে করে আর সে ধরনের কুসংস্কার থেকেও এই মৃতদেহ চুরির ধারণাটি চলে আসছে বলে অনেকেই মনে করেন।সোহেল মাহমুদ জানান, আসলে ইলেকট্রিক শক খেয়ে মানুষের মৃত্যু হলে মৃতদেহ যেমন হয় বজ্রপাতে মৃত মানুষের মৃতদেহ ঠিক একইরকম হয়। কোনও পার্থক্য থাকেনা।

বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮

জুম্মার_দিনের_এই_বিশেষ আমলেই মাফ পাবেন ৮০ বছরের গুনাহ।


# জুম্মার_দিনের_এই_বিশেষ

আমলেই মাফ পাবেন ৮০ বছরের গুনাহ।


সংগ্রহঃ #আধার_কালো_রাতের_চাঁদঃ এবং সংস্কারকবৃন্দ গ্রুপ!





আল্লাহতায়ালা নিজেই তার বান্দাদের নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘সবচেয়ে ওই ব্যক্তি কৃপন, যে আমার নাম শুনেও দরুদ পড়েনি।’

নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া আমাদের কর্তব্য। দরুদ পড়লে আমাদেরই লাভ। একবার দরুদ পড়ার জন্য ১০টি রহমত আল্লাহতায়ালা দেবেন। এর মধ্যে শুক্রবারে দরুদ পাঠের রয়েছে আরও বেশি ফজিলত। নিচে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হলো- হজরত আবু উমামা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়।

যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সবচেয়ে আমার নিকটতম হবে।’ -তারগিব : ১৫৭ হজরত আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এইমাত্র আল্লাহতায়ালার বাণী নিয়ে হাজির হলেন।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তেগফার করে।’ -তারগিব : ৩/২৯৯

হজরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার ওপর দরুদ পাঠ করা পুলসিরাত পার হওয়ার সময় আলো হবে। যে ব্যক্তি জুমার দিন ৮০ বার দরুদ পড়ে তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।’

অন্য রেওয়াতে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থান থেকে ওঠার আগে ৮০ বার এই দরুদ শরিফ পাঠ করে- ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিইয়্যিল উম্মিইয়ি ওয়া আলা আলিহি ওয়া আস হাবিহি ওয়াসাল্লিমু তাসলিমা’। তার ৮০ বছরের পাপ ক্ষমা হয়ে যায় এবং ৮০ বছরের ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়।’ -আফজালুস সালাওয়াত : ২৬

হজরত আলি রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরুদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকেরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ -কানজুল উম্মাল : ১৭৪

হজরত আবু দারদা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার ওপর জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো।

কারণ এ হলো এমন মোবারক দিন; যে দিনে ফেরেশতারা উপস্থিত হয়। যখন কোনো ব্যক্তি আমার ওপর দরুদ পাঠ করে ওই দরুদ সে পড়ার আগেই আমার কাছে আনীত হয়। আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ইন্তেকালের পরেও কি আপনার কাছে আনীত হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইন্তেকালের পরেও। আল্লাহতায়ালা জমিনের জন্য সব নবীর দেহ হারাম করে দিয়েছেন।’ -তারগিব : ৩/৩০৩

আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে নবীর প্রতি বেশি

বেশি দরুদ পাঠের তওফিক দান করুন। আমিন।

মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১৮

প্রথমবারের মতো টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের আটে টিম টাইগার কালের কণ্ঠ অনলাইন


প্রথমবারের মতো টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের আটে টিম টাইগার

Www.facebook.gazipurnews3.com    ১ মে, ২০১৮ ১৪:৩৬   


টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে এখন আমরা আটে

টেস্ট র্যাংকিংয়ে সুখবরের সুবাতাস বইছে টিম টাইগারের শিবিরে। দেশের জন্যে দারুণ খবর তো বটেই। আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে এক ধাপ উন্নতি ঘটেছে বাংলাদেশ দলের। র্যাংকিং তালিকায় ৯ থেকে ৮-এ উঠে এসেছে সাকিব আল হাসানের দল। এই প্রথমবারের মতো তালিকার ৮ নম্বর দখল করলো বাংলাদেশ।


ওদিকে, ক্রিকেটের দুনিয়ায় প্রতাপশালী দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হটিয়ে তার জায়গাটি দখল করেছে লাল-সবুজের দল। কাজেই র্যাংকিংয়ে ৯-এ নেমে গেছে দলটি। এখন বাংলাদেশের পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলটির সংগ্রহ ৬৭ রেটিং পয়েন্ট। আর বাংলাদেশের পয়েন্ট ৭৫। গত এপ্রিলেই ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় ৯ নম্বরে অবস্থান করছিল বাংলাদেশ। এবার যোগ হলো আরো ৪ পয়েন্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়েছে ৫ পয়েন্ট।


র্যাংকিংয়ের ৭-এ আছে পাকিস্তান। তাদের রেটিং পয়েন্ট ৮৬। ভারত আছে শীর্ষে, তাদের রেটিং পয়েন্ট ১২৫। দ্বিতীয় অবস্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা, পিছিয়ে আছে ১৩ পয়েন্টে। অস্ট্রেলিয়া উঠে এসেছে ৩-এ, রেটিং পয়েন্ট ১০৬। নিউজিল্যান্ড ১০২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে পরের স্থান দখল করেছে। তালিকার ৫ ও ৬-এ থাকা দুটি দল যথাক্রমে ইংল্যান্ড (৯৮ রেটিং পয়েন্ট) ও শ্রীলঙ্কা (৯৪ রেটিং পয়েন্ট)।


২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ এর মধ্যে জয়ের পাল্লা মোটেও ভারী নয়। এই তিন বছরে মোট ১৮টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। জিতেছে মাত্র ৩টিতে। পরাজয় এসছে ১০টিতে। আর ৫টিতে ড্র। আর ৯-এ যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ একই সময়ের মধ্যে ২৮টি টেস্ট খেলে ১৮টি হারের বিপরীতে মাত্র ৫টিতে জিতেছে।

সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৮

মানবদেহের মজার সব তথ্য!


মানবদেহের মজার সব তথ্য !!











১. মানুষের পাকস্থলীতে দিনে ২ লিটার পর্যন্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি হয়,যা কিনা ধাতুকেও পর্যন্ত ক্ষয় করতে সক্ষম।কিন্তু পাকস্থলীর কোন ক্ষতি হয় না কারন এতে প্রতি মিনিটে ক্ষয়ের সমানতালে ৫০০,০০০টি করে নতুন কোষ উতপন্ন হচ্ছে।

২. একজন পুরুষের শরীরে গড়ে ৫ লিটার রক্ত থাকে,নারীর শরীরে থাকে ৪.৩ লিটার।

৩. মানুষের চুল দিনে দৈর্ঘ্যে ০.৫ মিলিমিটার করে বাড়ে।

৪. হাতের নখ সপ্তাহে .০৫ সেন্টিমিটার করে বাড়ে।আর পায়ের নখ এর এক-চতুর্থাংশ গতিতে বাড়ে।

৫. আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের ভেতর দিয়ে ঘন্টায় ২৯০ কিমি বেগে সংকেত আদান-প্রদান হয়।

৬. হাঁচির সময় নাক দিয়ে ১৬০ কিমি/ঘন্টা বেগে বাতাস বের হয়।

৭. মানুষের ত্বক থেকে প্রতি মিনিটে ৫০,০০০ মৃত মাইক্রোস্কপিক কণা ঝরে পড়ে।

৮. পুরুষের চেয়ে নারীর শরীরের একই অস্থি সাধারনত ৬-১৩% ছোট হয়ে থাকে।

৯. মানুষের শরীরের ৯৯ শতাংশই অক্সিজেন,কার্বন,হাইড্রোজেন,নাইট্রোজেন,ক্যালসিয়াম আর ফসফরাস দিয়ে তৈরি।

১০. মানুষের শরীরের সম্মিলিত অস্থির ভর মোট শরীরের ভরের পাঁচ ভাগের এক ভাগ।

১১. মানুষের শরীরে যত রক্তবাহী নালী আছে সেগুলা জোড়া লাগালে ১০০,০০০ কিলোমিটার হবে যা দিয়ে পৃথিবীকে ২.৫বার প্যাচানো যাবে।

১২. মানুষের রক্তে ২৫,০০০,০০০,০০০-৩০,০০০,০০০,০০০ টি লোহিত কণিকা থাকে যেগুলার গড় আয়ু ১২০ দিন।প্রতি মুহুর্তে শরীরে ১,২০০,০০০-২,০০০,০০০ টি লোহিত কণিকা তৈরি হয়।একজন মানুষের শরীরে তার জীবদ্দশায় যত লোহিত কণিকা তার মোট ভর প্রায় আধা টন।

১৩. মানুষের শরীরে যে পরিমান কার্বন আছে তা দিয়ে ৯০০ টি পেন্সিল তৈরি করা যাবে।জমে থাকা চর্বি দিয়ে বানান যাবে ৭৫টি মোমবাতি।২২০টি ম্যাচের কাঠি বানাবার মত ফসফরাস আছে শরীরে।

১৪. হৃদপিন্ড মিনিটে গড়ে ৭০ বার করে দিনে প্রায় ১০০,০০০ বারের বেশি সারাদিনে পাম্প হয়।প্রতিবারে ৫৯ সিসি রক্ত পাম্প হয় যার পরিমানটা দিনের হিসেবে ১৩,৬৪০ লিটার।

১৫. ত্বকের ৩,০০০,০০০ ঘর্মগ্রন্থি দিয়ে দিনে .৫ লিটার ঘাম নির্গত হয় যার পরিমান গরমের দিনে ১৩.৫ লিটার পর্যন্ত হতে পারে।

১৬. মানুষ গড়ে মিনিটে ২০ বার শ্বাস নেয়,এতে ৬ লিটার বাতাস থাকে।এভাবে দিনে মোট ৮,৬৪০ লিটার বাতাস ২৮,৮০০ বার শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে নেয় মানুষ।

১৭. বয়স ও পরিপার্শ্বে উপর নির্ভর করে মানুষের দিনে ৪০০ মিলিলিটার থেকে ২ লিটার পর্যন্ত প্রস্রাব হতে পারে।

মহানবীর জীবন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব: নরেন্দ্র মোদি


মহানবীর জীবন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব: নরেন্দ্র মোদি




আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সমতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ যে জীবন যাপন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) করেছেন, তা অনুসরণ করা সকল মানুষের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


তিনি বলেন, ‘মহানবী জ্ঞান এবং সমবেদনাকে গুরুত্ব দিতেন। তাঁর মধ্যে এক ফোঁটাও অহংবোধ দেখা যায়নি। তিনি প্রচার করেছেন, মানুষের সব ধরনের অহংবোধকে জ্ঞান একাই পরাজিত করতে পারে।’


রবিবার ‘মান কি বাত’ নামের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে নরেন্দ্র মোদি এসব কথা বলেন। প্রতি মাসে আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এতে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন মোদি। এবার এ অনুষ্ঠানে তিনি মহানবীকে নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি গৌতম বুদ্ধেরও প্রশংসা করেন।


মোদী বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন পরেই রমজান মাস শুরু হবে। পুরো বিশ্বেই সম্মান আর শ্রদ্ধার সঙ্গে রমজান মাস পালন করা হয়ে থাকে। রোজা পালন হচ্ছে এমন এক সামাজিক ও সমষ্টিগত বিষয় যা একজন ব্যক্তিকে ক্ষুধার্ত থাকার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সাহায্য করে। রোজা রাখলে একজন মানুষ অন্যজনের ক্ষুধার্ত অবস্থা বুঝতে পারে। যখন সে তৃষ্ণার্ত থাকে তখন সে অন্যের তৃষ্ণার্ত অবস্থা অনুধাবন করতে পারে। হযরত মোহাম্মদ (দ.) যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা স্মরণ করার একটি বড় সুযোগ হলো রোজা।’


মহানবীর সমতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ জীবন যাপন অনুসরণ করা সকলের দায়িত্ব উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একবার এক ব্যক্তি মহানবীকে (দ.) প্রশ্ন করেছিলেন- ইসলামের সবচেয়ে উত্তম জিনিস কি? উত্তরে মহানবী বলেন- একজন দরিদ্র এবং অভাবগ্রস্তকে খাওয়ানো এবং আপনি কাউকে চেনেন বা না চেনেন সবার সঙ্গে আন্তরিক থাকা।’


মোদী বলেন, ‘মহানবীর শিক্ষা কারো যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিছু থাকে তবে তার উচিত অভাবগ্রস্তদের মাঝে সেগুলো বিতরণ করা। তাই রমজান মাসে দান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এই পবিত্র মাসে উদারহস্তে দান করে থাকেন।’

‘তিনি (মহানবী) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন বস্তুগত সম্পদ কখনোই মানুষকে সম্পদশালী করতে পারে না। বরং অভ্যন্তরীন জ্ঞানই মানুষকে সম্পদশালী করে’- বলেন নরেন্দ্র মোদি।


পবিত্র রমজান মাসে সব মানুষ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহানবীর বার্তা অনুসরণ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মোদি। একই অনুষ্ঠানে বুদ্ধ পুর্ণিমা উপলক্ষে গৌতম বুদ্ধেরও প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, লাইভমিন্ট

বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮

মায়ের সম্মান নিয়ে হজরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা"

মায়ের সম্মান নিয়ে হজরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা"











==============================

======

"একদিন হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে কাঁদছেন। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হোরায়রা তুমি কেন কাঁদছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমার মা আমাকে মেরেছেন। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেন তুমিকি কোন বেয়াদবী করেছ?

:

আবু হোরায়রা বললেন, না হুজুর কোন বেয়াদবী করিনি। আপনার দরবার হতে বাড়ি যেতেআমার রাত হয়েছিল বিধায় আমার মা আমাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করায় আমি আপনার কথা বললাম। আর আপনার কথা শুনে মা রাগে আমাকে মারধর করল আর বলল, "হয়ত আমার বাড়ি ছাড়বি আর না হয় মুহাম্মদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবার ছাড়বি।"

:

আমি বললাম, "ও আমার মা। তুমি বয়স্ক মানুষ। তোমার গায়ে যত শক্তি আছে তত শক্তি দিয়ে মারতে থাকো। মারতে মারতে আমাকে বাড়ি থেকে করে দাও। তবুও আমি আমার রাসুলকে ছাড়তে পারবো না।"

:

তখন রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তোমার মা তোমাকে বের করে দিয়েছেন আর এজন্য আমার কাছে নালিশ করতে এসেছ? আমার তো এখানে কিছুই করার নেই।"

:

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বললেন, "হে রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আমার মায়ের জন্য এখানে নালিশ করতে আসি নাই।"

:

রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, "তাহলে কেন এসেছ?"

:

আবু হোরায়রা বললেন, আমি জানি আপনি আল্লাহর নবী। আপনি যদি হাত উঠিয়ে আমার মায়ের জন্য দোয়া করতেন, যাতে আমার মাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।

:

আর তখনই সাথে সাথে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, "হে আল্লাহ! আমি দোয়া করি আপনি আবু হোরায়রার আম্মাকে হেদায়েত করে দেন।”

:

রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেন আর আবু হোরায়রা বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। পিছন থেকে কয়েকজন লোক আবু হোরায়রার জামা টেনে ধরল এবং বললো, হে আবু হোরায়রা! "তুমি দৌড়াচ্ছ কেন?"

:

তখন আবু হোরায়রা বললেন, "ওহে সাহাবীগণ তোমরা আমার জামা ছেড়ে দাও। আমাকে দৌড়াতে দাও।"

:

"আমি দৌড়াইতেছি এই কারণে যে, আমি আগে পৌঁছলাম নাকি আমার নবীজির দোয়া আগে পৌঁছে গেছে।"

:

হযরত আবু হোরায়রা দরজায় ধাক্কাতে লাগলো। ভিতর থেকে তার মা যখন দরজা খুললো তখন আবু হোরায়রা দেখলেন তার মার সাদা চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। তখন মা আমাকে বললেন, "হে আবু হোরায়রা! তোমাকে মারার পর আমি বড় অনুতপ্ত হয়েছি, অনুশোচনা করেছি। মনে মনে ভাবলাম আমার ছেলে তো কোন খারাপ জায়গায় যায়নি। কেন তাকে মারলাম? আমি বরং লজ্জায় পড়েছি তোমাকে মেরে। হে আবু হোরায়রা! আমি গোসল করেছি। আমাকে তাড়াতাড়ি রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে চল।"

:

আর তখনই সাথে সাথে আবু হোরায়রা তার মাকে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়ে গেলেন। আর তার মাকে সেখানেই কালিমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন।

:

"পিতা মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা রক্ষা করতে পারো।" সুবাহান আল্লাহ! [তিরমিজি ]

বুধবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী মসজিদ আছে কোন দেশে? জানলে অবাক হয়ে যাবেন!


পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী মসজিদ আছে কোন দেশে? জানলে অবাক হয়ে যাবেন!




সাধারণভাবে, ইসলাম ধর্মের উপাসনা গৃহই হল মসজিদ। আর সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশী সংখ্যক মসজিদ রয়েছে। সংখ্যাটা হল ৩০ হাজারের চেয়েও বেশী।


ভারতের বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ দেখে নিন এক নজরে-

আদিনা মসজিদ- ১৩৬৩ সালে তৈরী। পশ্চিম বঙ্গের মালদা জেলার ইংলিশ বাজারে অবস্থিত। সুলতান সিকান্দর শাহ তৈরী করেছিলেন।

চেরামন জুমা মসজিদ- কেরলে অবস্থিত। ভারতের প্রথম মসজিদ এটা।


টিপু সুলতান মসজিদ- কলকাতায় অবস্থিত সুপ্রাচীন এই মসজিদ ১৮৩২ সালে তৈরী হয়।


জামা মসজিদ- ১৮০২ সালে স্থাপিত মুম্বাইয়ে অবস্থিত।


মতি মসজিদ- দিল্লিতে অবস্থিত ১৬৬০ খ্রীষ্টাব্দে স্থাপিত।


এছাড়া ভারতে এবং সারা পৃথিবীতে আরও অনেক বিখ্যাত ঐতিহাসিক মসজিদ রয়েছে।

সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

ঈসা (আঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র ও তাঁর ঊর্ধ্বারোহন


ঈসা (আঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র ও তাঁর ঊর্ধ্বারোহন :

তৎকালীন রোম সম্রাট ছাতিয়ূনুস-এর নির্দেশে (মাযহারী) ঈসা (আঃ)-কে গ্রেফতারের জন্য সরকারী বাহিনী ও ইহুদী চক্রান্তকারীরা তাঁর বাড়ী ঘেরাও করে। তারা জনৈক নরাধমকে ঈসা (আঃ)-কে হত্যা করার জন্য পাঠায়। কিন্তু ইতিপূর্বে আল্লাহ ঈসা (আঃ)-কে উঠিয়ে নেওয়ায় সে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে যায়। কিন্তু এরি মধ্যে আল্লাহর হুকুমে তার চেহারা ঈসা (আঃ)-এর সদৃশ হয়ে যায়। ফলে ইহুদীরা তাকেই ঈসা ভেবে শূলে বিদ্ধ করে হত্যা করে।

ইহুদী-নাছারারা কেবল সন্দেহের বশবর্তী হয়েই নানা কথা বলে এবং ঈসাকে হত্যা করার মিথ্যা দাবী করে। আল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই। তারা কেবলই সন্দেহের মধ্যে পড়ে আছে। এটা নিশ্চিত যে, তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি’(নিসা ৪/১৫৭)। বরং তার মত কাউকে তারা হত্যা করেছিল ।

উল্লেখ্য যে, ঈসা (আঃ) তাঁর উপরে বিশ্বাসী সে যুগের ও পরবর্তী যুগের সকল খৃষ্টানের পাপের বোঝা নিজে কাঁধে নিয়ে প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ শূলে বিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে খৃষ্টানদের দাবী স্রেফ প্রতারণা ও অপপ্রচার বৈ কিছুই নয়।

আল্লাহর পাঁচটি অঙ্গীকার :

ইহুদীদের বিপক্ষে হযরত ঈসা (আঃ)-কে সাহায্যের ব্যাপারে আল্লাহ পাঁচটি ওয়াদা করেছিলেন এবং সবক’টিই তিনি পূর্ণ করেন। (১) হত্যার মাধ্যমে নয় বরং তার স্বাভাবিক মৃত্যু হবে (২) তাঁকে ঊর্ধ্বজগতে তুলে নেওয়া হবে (৩) তাকে শত্রুদের অপবাদ থেকে মুক্ত করা হবে (৪) অবিশ্বাসীদের বিপক্ষে ঈসার অনুসারীদেরকে ক্বিয়ামত অবধি বিজয়ী রাখা হবে এবং (৫) ক্বিয়ামতের দিন সবকিছুর চূড়ান্ত ফায়ছালা করা হবে। এ বিষয়গুলি বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতে। যেমন আল্লাহ বলেন,

إِذْ قَالَ اللهُ يَا عِيْسَى إِنِّيْ مُتَوَفِّيْكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَجَاعِلُ الَّذِيْنَ اتَّبَعُوْكَ فَوْقَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأَحْكُمُ بَيْنَكُمْ فِيْمَا كُنْتُمْ فِيْهِ تَخْتَلِفُوْنَ- (آل عمران ৫৫)-

‘আর স্মরণ কর যখন আল্লাহ বললেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে ওফাত দিব এবং তোমাকে আমার কাছে তুলে নেব এবং তোমাকে কাফিরদের হাত থেকে মুক্ত করব। আর যারা তোমার অনুসরণ করবে, তাদেরকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত কাফিরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করে রাখবো। অতঃপর তোমাদের সবাইকে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তোমাদের মধ্যকার বিবাদীয় বিষয়ে ফায়ছালা করে দেব’ (আলে ইমরান ৩/৫৫)

উক্ত আয়াতে বর্ণিত مُتَوَفِّيْكَ অর্থ ‘আমি তোমাকে ওফাত দিব’। ‘ওফাত’ অর্থ পুরোপুরি নেওয়া। মৃত্যুকালে মানুষের আয়ু পূর্ণ হয় বলে একে ‘ওফাত’ বলা হয়। রূপক অর্থে নিদ্রা যাওয়াকেও ওফাত বা মৃত্যু বলা হয়। যেমন আল্লাহ বলেন,اللهُ يَتَوَفَّى الْأَنْفُسَ حِيْنَ مَوْتِهَا وَالَّتِيْ لَمْ تَمُتْ فِيْ مَنَامِهَا-‘আল্লাহ মানুষের প্রাণ নিয়ে নেন তার মৃত্যুকালে, আর যে মরেনা তার নিদ্রাকালে’ (যুমার ৩৯/৪২)। সেকারণ যাহহাক, ফাররা প্রমুখ বিদ্বানগণ مُتَوَفِّيْكَ وَرَافِعُكَ إِلىَّ -এর অর্থ বলেন, আমি আপনাকে নিজের কাছে উঠিয়ে নেব এবং শেষ যামানায় (পৃথিবীতে নামিয়ে দিয়ে) স্বাভাবিক মৃত্যু দান করব। এখানে বর্ণনার আগপিছ হয়েছে মাত্র’ (কুরতুবী, ইবনু কাছীর)। যা কুরআনের বহু স্থানে হয়েছে। ঈসার অবতরণ, দাজ্জাল নিধন, পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য স্থাপন ইত্যাদি বিষয়ে ছহীহ ও মুতাওয়াতির হাদীছ সমূহ বর্ণিত হয়েছে। প্রায় সকল বড় বড় নবীই হিজরত করেছেন। এক্ষণে পৃথিবী থেকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া, অতঃপর পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু দান করা- এটা ঈসা (আঃ)-এর জন্য এক ধরনের হিজরত বৈ কি! পার্থক্য এই যে, অন্যান্য নবীগণ দুনিয়াতেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে হিজরত করেছেন। পক্ষান্তরে ঈসা (আঃ) দুনিয়া থেকে আসমানে হিজরত করেছেন। অতঃপর আসমান থেকে দুনিয়াতে ফিরে আসবেন। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত এবং তিনিই সকল ক্ষমতার অধিকারী।

অতঃপর ঈসার অনুসারীদের ক্বিয়ামত অবধি বিজয়ী করে রাখার অর্থ ঈমানী বিজয় এবং সেটি ঈসা (আঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অনুসারীদের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছে। ঈমানী বিজয়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিজয় যেমন খেলাফত যুগে হয়েছে, ভবিষ্যতে আবারও সেটা হবে। এমনকি কোন বস্তিঘরেও ইসলামের বিজয় নিশান উড়তে বাকী থাকবে না। সবশেষে ক্বিয়ামত প্রাক্কালে ঈসা ও মাহদীর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক বিজয় সংঘটিত হবে এবং সারা পৃথিবী শান্তির রাজ্যে পরিণত হবে।[7]

শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮

আজ পবিত্র শব-ই মেরাজ....



আজ পবিত্র শব-ই মেরাজ

www.koborki.blogspot.com

 শব-ই মেরাজ আজ। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষের রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের অপার সব রহস্য।


রাসূল (সা.) উম্মতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ৫ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে আসেন, যে নামাজ মু’মিনের মেরাজস্বরূপ।


এমন নানা কারণে এ রাত অতি পবিত্র ও মহান আল্লাহর অফুরন্ত রহমত-বরকতে সমৃদ্ধ। দিনটিকে মুসলিম উম্মাহর বিশেষ দিন হিসেবে পালন করা হয়।


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, রোজা রাখা, নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শবে মেরাজ পালন করবেন।


আল্লাহপাক আমাদের সকলকে পবিত্র শব-ই মেরাজ যথাযথভাবে পালনের তৌফিক দান করুন- আমিন।

শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৮

: পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা ভলবেন! => জিবরাইল! মৃত্যু বরণ কর! => মিকাইল! মৃত্যু বরণ কর! www.koborki.blogspot.com

www.koborki.blogspot.com

পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সপ্তআকাশ ভেঙে দিবেন। সপ্ত আকাশে অবস্হানরত ফেরেশতারা মৃত্যুর দুয়ারে। সমস্হ ফেরেশতা মৃত্যুর পেয়ালা পান করবে। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও বরণ করবে মৃত্যুর মালা। অতঃপর নির্দেশ হবে -

:

=> জিবরাইল! মৃত্যু বরণ কর!

=> মিকাইল! মৃত্যু বরণ কর!

:

আল্লাহ তাআলার ইশক ও ভালোবাসা সুপারিশ করবে - 'হে আল্লাহ! জিবরাইল ও মিকাইলকে রক্ষা করো!' তখন আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করবেন -

ﺍَﺳْﻜُﺖْ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﺘَﺒْﺖُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺗَﺤْﺖُ ﻋَﺮْﺷِﻰْ

"চুপ কর! আমার আরশের নিচে যারা আছে সকলের জন্যই আমি মৃত্যুর ফয়সালা করে দিয়েছি।"

:

মৃত্যুবরণ করবে জিবরাইল। মিকাইল ও শেষ। সিঙা ফুৎকারের ইসরাফিলও ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে। সিঙার ফুৎকার হাওয়ায় ভেসে উড়ে যাবে আরশে। আরশের উপরে আছেন আল্লাহ। নিচে কেবল আজরাইল। তখন আল্লাহ তাআলা প্রশ্ব করবেন - 'বলো আর কে বাকি আছে?'

বলবে, 'উপরে তুমি আর নিচে তোমার গোলাম।'

নির্দেশ করবেন -

ﺍِﻧَّﻚَ ﻣَﻴّـِﺖٌ

"তুমিও মরে যাও।"

এতদিন পর্যন্ত যে সকলের রুহ কবজ করে ফিরতো আজ সে নিজেই নিজের প্রাণ কবজ করবে। যদি মানুষ বেঁচে থাকতো তাহলে মৃত্যুমুখে আজরাইলের সেই চিৎকার শুনে হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে সকল মানুষ মারা যেত।

:

=> আজ কারও জন্য কাঁদবার মত কেউ নেই।

=> আজ কাউকে দাফন করার মত কেউ নেই।

=> আজ কাউকে কাফন পরানোর মত কেউ নেই।

=> আজ কারও জন্য মাতম করার কেউ নেই।

=> আজ সম্পদ হারিয়ে যাওয়ার ফলে মামলা

করার মত কেউ নেই।

=> আজ দরবার আছে। দরবারী কেউ নেই।

=> কুরসী আছে। কুরসীতে বসার কেউ নেই।

=> বাদশাহী আছে। বাদশাহ কেউ নেই।

=> পেয়ালা আছে পানকারী মত কেউ নেই।

=> আজ এক আল্লাহ আছেন। তাঁর কোন শরীক নেই।

*

আল্লাহ তাআলা যখন সবাইকে মৃত্যু দিয়ে দিবেন তখন ঘোষণা করবেন -

ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻰ ﺷَﺮِ ﻳْﻜٌﺎ ﻓَﻠْﻴَﺂﺕِ ...

"আমার কোন শরীক আছে কি যে আমার মোকাবিলা করবে?"

তিনি তিনবার এই ঘোষণা দিবেন। বলবেন, আমার কোন প্রতিপক্ষ থাকলে সামনে এসো। অতঃপর তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে নত করে দিয়ে ঘোষণা করবেন -

ﺍَﻧَﺎ ﺍﻟْﻘُﺪُّﺱُ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﺆْ ﻣِﻦُ

"আমিই কুদ্দুস সালাম ও মু'মিন।"

পুণরায় ঝাঁকুনি দিয়ে একই বাণী উচ্চারণ করবেন। তৃতীয়বার উচ্চারণ করবেন -

ﺍَﻧﺎَ ﺍﻟْﻤُﻬَﻴْﻤِﻴﻦُ ﺍﻟْﻌَﺰِ ﻳْﺰُ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺮُ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُ

"আমিই মুহাইমিনুল আজিজুল জব্বারুল মুতাকাব্বির।"

:

তারপর বলবেন -

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ

"আজ রাজারা কোথায়?"

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﺠَﺒَّﺎﺭُﻭْﻥَ

"জালেমরা আজ কোথায়?"

ﺍَﻳْﻦَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻜَﺒِِّﺮُﻭْﻥَ

"অহঙ্কারীরা আজ কোথায়?"

# বলবেনঃ

ﻟِﻤَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ

" আজ বাদশাহ কে?"

কোন জবাব নেই। অতঃপর আল্লাহ নিজেই বলবেন -

َ ﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻮَﺍﺣِﺪِ ﺍﻟْﻘَﻬَّﺎﺭِ

" পরাক্রমশালী এক আল্লাহরই নিরঙ্কুশ রাজত্ব।"

- [ সুরা মু'মিনঃ ১৬ ]

:

যেখানে হিসাব নিবেন স্বয়ং আল্লাহ। যেখানে ব্যাবস্হা আছে শাস্তি ও পুরষ্কারের। যেখানে ব্যাবস্হা আছে চিরস্হায়ী সম্মান ও চিরস্হায়ী অপমানের। যেখানে চিরন্তন সুশ্রী রূপ আছে, আছে কুশ্রী রূপও। যেখানকার সফলতা চিরন্তন, ব্যার্থতাও চিরন্তন। যেখানকার অপমান যেমন সীমাহীন তেমনি সীমাহীন সম্মানও।

:

আল্লাহ যদি কারও প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে তাকে বেহেশত দিবেন আর অসন্তুষ্ট হলে দিবেন জাহান্নাম। আমাদের এই মরণই যদি শেষ কথা হতো তাহলে আর কোন চিন্তা ছিলোনা। নামাজ পড়তাম কিংবা না পড়তাম। সত্য বলতাম কিংবা না বলতাম। অন্যায় করতাম কিংবা কল্যাণ করতাম। সুদ খেতাম কিংবা না খেতাম। মানুষের প্রতি ন্যায় করতাম কিংবা অন্যায় করতাম।

*

কিন্তু মৃত্যুই শেষ নয়। কবর, হাশর, মিযান, পুলসিরাত, জান্নাত অথবা জাহান্নাম এসকল মন্জ্ঞিল রয়েছে আমাদের সামনে। আল্লাহ সকলের জন্য তা সহজ করে দিন। আমিন।

বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৮

মূসা ও ফেরাঊনের কাহিনী :


মূসা ও ফেরাঊনের কাহিনী :

সুদ্দী ও মুররাহ প্রমুখ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস ও আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) এবং বহু সংখ্যক ছাহাবী থেকে বর্ণনা করেন যে, ফেরাঊন একদা স্বপ্নে দেখেন যে, বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিক হ’তে একটি আগুন এসে মিসরের ঘর-বাড়ি ও মূল অধিবাসী ক্বিবতীদের জ্বালিয়ে দিচ্ছে। অথচ অভিবাসী বনু ইস্রাঈলদের কিছুই হচ্ছে না। ভীত-চকিত অবস্থায় তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। অতঃপর দেশের বড় বড় জ্যোতিষী ও জাদুকরদের সমবেত করলেন এবং তাদের সম্মুখে স্বপ্নের বৃত্তান্ত বর্ণনা দিলেন ও এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলেন। জ্যোতিষীগণ বলল যে, অতি সত্বর বনু ইস্রাঈলের মধ্যে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবে। যার হাতে মিসরীয়দের ধ্বংস নেমে আসবে’।[14]

মিসর সম্রাট ফেরাঊন জ্যোতিষীদের মাধ্যমে যখন জানতে পারলেন যে, অতি সত্বর ইস্রাঈল বংশে এমন একটা পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, যে তার সাম্রাজ্যের পতন ঘটাবে। তখন উক্ত সন্তানের জন্ম রোধের কৌশল হিসাবে ফেরাঊন বনু ইস্রাঈলদের ঘরে নবজাত সকল পুত্র সন্তানকে ব্যাপকহারে হত্যার নির্দেশ দিল। উদ্দেশ্য ছিল, এভাবে হত্যা করতে থাকলে এক সময় বনু ইস্রাঈল কওম যুবক শূন্য হয়ে যাবে। বৃদ্ধরাও মারা যাবে। মহিলারা সব দাসীবৃত্তিতে বাধ্য হবে। অথচ বনু ইস্রাঈলগণ ছিল মিসরের শাসক শ্রেণী এবং উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন জাতি। এই দূরদর্শী কপট পরিকল্পনা নিয়ে ফেরাঊন ও তার মন্ত্রীগণ সারা দেশে একদল ধাত্রী মহিলা ও ছুরিধারী জাল্লাদ নিয়োগ করে। মহিলারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে বনু ইস্রাঈলের গর্ভবতী মহিলাদের তালিকা করত এবং প্রসবের দিন হাযির হয়ে দেখত, ছেলে না মেয়ে। ছেলে হ’লে পুরুষ জাল্লাদকে খবর দিত। সে এসে ছুরি দিয়ে মায়ের সামনে সন্তানকে যবহ করে ফেলে রেখে চলে যেত।[15] এভাবে বনু ইস্রাঈলের ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়ে গেল। ইবনু কাছীর বলেন, একাধিক মুফাসসির বলেছেন যে, শাসকদল ক্বিবতীরা ফেরাঊনের কাছে গিয়ে অভিযোগ করল যে, এভাবে পুত্র সন্তান হত্যা করায় বনু ইস্রাঈলের কর্মজীবী ও শ্রমিক শ্রেণীর ঘাটতি হচ্ছে। যাতে তাদের কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। তখন ফেরাঊন এক বছর অন্তর অন্তর পুত্র হত্যার নির্দেশ দেয়। এতে বাদ পড়া বছরে হারূণের জন্ম হয়। কিন্তু হত্যার বছরে মূসার জন্ম হয়।[16] ফলে পিতা-মাতা তাদের নবজাত সন্তানের নিশ্চিত হত্যার আশংকায় দারুণভাবে ভীত হয়ে পড়লেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ মূসা (আঃ)-এর মায়ের অন্তরে ‘ইলহাম’ করেন। যেমন আল্লাহ পরবর্তীতে মূসাকে বলেন,

وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَيْكَ مَرَّةً أُخْرَى- إِذْ أَوْحَيْنَا إِلَى أُمِّكَ مَا يُوحَى- أَنِ اقْذِ فِيهِ فِي التَّابُوتِ فَاقْذِ فِيهِ فِي الْيَمِّ فَلْيُلْقِهِ الْيَمُّ بِالسَّاحِلِ يَأْخُذْهُ عَدُوٌّ لِّي وَعَدُوٌّ لَّهُ وَأَلْقَيْتُ عَلَيْكَ مَحَبَّةً مِّنِّي وَلِتُصْنَعَ عَلَى عَيْنِي-(طه ৩৭-৩৯)-

‘আমরা তোমার উপর আরো একবার অনুগ্রহ করেছিলাম’। ‘যখন আমরা তোমার মাকে প্রত্যাদেশ করেছিলাম, যা প্রত্যাদেশ করা হয়’। ‘(এই মর্মে যে,) তোমার নবজাত সন্তানকে সিন্দুকে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দাও’। ‘অতঃপর নদী তাকে তীরে ঠেলে দেবে। অতঃপর আমার শত্রু ও তার শত্রু (ফেরাঊন) তাকে উঠিয়ে নেবে এবং আমি তোমার উপর আমার পক্ষ হ’তে বিশেষ মহববত নিক্ষেপ করেছিলাম এবং তা এজন্য যে, তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও’ (ত্বোয়াহা ২০/৩৭-৩৯)। বিষয়টি আল্লাহ অন্যত্র বলেন এভাবে,

وَأَوْحَيْنَا إِلَى أُمِّ مُوسَى أَنْ أَرْضِعِيْهِ فَإِذَا خِفْتِ عَلَيْهِ فَأَلْقِيْهِ فِي الْيَمِّ وَلاَ تَخَافِي وَلاَ تَحْزَنِي إِنَّا رَادُّوهُ إِلَيْكِ وَجَاعِلُوهُ مِنَ الْمُرْسَلِينَ-(القصص ৭)-

‘আমরা মূসার মায়ের কাছে প্রত্যাদেশ করলাম এই মর্মে যে, তুমি ছেলেকে দুধ পান করাও। অতঃপর তার জীবনের ব্যাপারে যখন শংকিত হবে, তখন তাকে নদীতে নিক্ষেপ করবে। তুমি ভীত হয়ো না ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ো না। আমরা ওকে তোমার কাছেই ফিরিয়ে দেব এবং ওকে নবীদের অন্তর্ভুক্ত করব’ (ক্বাছাছ ২৮/৭)। মূলতঃ শেষের দু’টি ওয়াদাই তাঁর মাকে নিশ্চিন্ত ও উদ্বুদ্ধ করে। যেমন আল্লাহ বলেন,

وَأَصْبَحَ فُؤَادُ أُمِّ مُوْسَى فَارِغاً إِنْ كَادَتْ لَتُبْدِيْ بِهِ لَوْلاَ أَن رَّبَطْنَا عَلَى قَلْبِهَا لِتَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ- (القصص ১০)-

‘মূসা জননীর অন্তর (কেবলি মূসার চিন্তায়) বিভোর হয়ে পড়ল। যদি আমরা তার অন্তরকে সুদৃঢ় করে না দিতাম, তাহ’লে সে মূসার (জন্য অস্থিরতার) বিষয়টি প্রকাশ করেই ফেলত। (আমরা তার অন্তরকে দৃঢ় করেছিলাম এ কারণে যে) সে যেন আল্লাহর উপরে প্রত্যয়শীলদের অন্তর্ভুক্ত থাকে’ (ক্বাছাছ ২৮/১০)

মূসা নদীতে নিক্ষিপ্ত হ’লেন :

ফেরাঊনের সৈন্যদের হাতে নিহত হবার নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখা দিলে আল্লাহর প্রত্যাদেশ (ইলহাম) অনুযায়ী পিতা-মাতা তাদের প্রাণাধিক প্রিয় সন্তানকে সিন্দুকে ভরে বাড়ীর পাশের নীল নদীতে ভাসিয়ে দিলেন।[17] অতঃপর স্রোতের সাথে সাথে সিন্দুকটি এগিয়ে চলল। ওদিকে মূসার (বড়) বোন তার মায়ের হুকুমে (ক্বাছাছ ২৮/১১) সিন্দুকটিকে অনুসরণ করে নদীর কিনারা দিয়ে চলতে লাগল (ত্বোয়াহা ২০/৪০)। এক সময় তা ফেরাঊনের প্রাসাদের ঘাটে এসে ভিড়ল। ফেরাঊনের পুণ্যবতী স্ত্রী আসিয়া (آسية ) বিনতে মুযাহিম ফুটফুটে সুন্দর বাচ্চাটিকে দেখে অভিভূত হয়ে পড়লেন। ফেরাঊন তাকে বনু ইস্রাঈল সন্তান ভেবে হত্যা করতে চাইল। কিন্তু সন্তানহীনা স্ত্রীর অপত্য স্নেহের কারণে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে ফেরাঊন নিজে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। কারণ আল্লাহ মূসার চেহারার মধ্যে বিশেষ একটা মায়াময় কমনীয়তা দান করেছিলেন (ত্বোয়াহা ২০/৩৯)। যাকে দেখলেই মায়া পড়ে যেত। ফেরাঊনের হৃদয়ের পাষাণ গলতে সেটুকুই যথেষ্ট ছিল। বস্ত্ততঃ এটাও ছিল আল্লাহর মহা পরিকল্পনারই অংশ বিশেষ। ফুটফুটে শিশুটিকে দেখে ফেরাঊনের স্ত্রী তার স্বামীকে বললেন,

وَقَالَتِ امْرَأَتُ فِرْعَوْنَ قُرَّتُ عَيْنٍ لِّي وَلَكَ لاَ تَقْتُلُوهُ عَسَى أَن يَّنْفَعَنَا أَوْ نَتَّخِذَهُ وَلَداً وَهُمْ لاَ يَشْعُرُوْنَ- (القصص ৯)-

‘এ শিশু আমার ও তোমার নয়নমণি। একে হত্যা করো না। এ আমাদের উপকারে আসতে পারে অথবা আমরা তাকে পুত্র করে নিতে পারি’। আল্লাহ বলেন, ‘অথচ তারা (আমার কৌশল) বুঝতে পারল না’ (ক্বাছাছ ২৮/৯)। মূসা এক্ষণে ফেরাঊনের স্ত্রীর কোলে পুত্রস্নেহ পেতে শুরু করলেন। অতঃপর বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য রাণীর নির্দেশে বাজারে বহু ধাত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া হ’ল। কিন্তু মূসা কারুরই বুকে মুখ দিচ্ছেন না। আল্লাহ বলেন, وَحَرَّمْنَا عَلَيْهِ الْمَرَاضِعَ مِن قَبْلُ- (القصص ১২)- ‘আমরা পূর্ব থেকেই অন্যের দুধ খাওয়া থেকে মূসাকে বিরত রেখেছিলাম’ (ক্বাছাছ ২৮/১২)। এমন সময় অপেক্ষারত মূসার ভগিনী বলল, ‘আমি কি আপনাদেরকে এমন এক পরিবারের খবর দিব, যারা আপনাদের জন্য এ শিশু পুত্রের লালন-পালন করবে এবং তারা এর শুভাকাংখী’? (ক্বাছাছ ২৮/১২)। রাণীর সম্মতিক্রমে মূসাকে প্রস্তাবিত ধাত্রীগৃহে প্রেরণ করা হ’ল। মূসা খুশী মনে মায়ের দুধ গ্রহণ করলেন। অতঃপর মায়ের কাছে রাজকীয় ভাতা ও উপঢৌকনাদি প্রেরিত হ’তে থাকল।[18]এভাবে আল্লাহর অপার অনুগ্রহে মূসা তার মায়ের কোলে ফিরে এলেন। এভাবে একদিকে পুত্র হত্যার ভয়ংকর আতংক হ’তে মা-বাবা মুক্তি পেলেন ও নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া সন্তানকে পুনরায় বুকে ফিরে পেয়ে তাদের হৃদয় শীতল হ’ল। অন্যদিকে বহু মূল্যের রাজকীয় ভাতা পেয়ে সংসার যাত্রা নির্বাহের দুশ্চিন্তা হ’তে তারা মুক্ত হ’লেন। সাথে সাথে সম্রাট নিয়োজিত ধাত্রী হিসাবে ও সম্রাট পরিবারের সাথে বিশেষ সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার ফলে তাঁদের পরিবারের সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পেল। এভাবেই ফেরাঊনী কৌশলের উপরে আল্লাহর কৌশল বিজয়ী হ’ল।ফালিল্লাহিল হাম্দ

আল্লাহ বলেন, وَمَكَرُوا مَكْراً وَمَكَرْنَا مَكْراً وَهُمْ لاَ يَشْعُرُونَ-(النمل ৫০)- ‘তারা চক্রান্ত করেছিল এবং আমরাও কৌশল করেছিলাম। কিন্তু তারা (আমাদের কৌশল) বুঝতে পারেনি’ (নমল ২৭/৫০)

শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৮


মুক্তিযুদ্ধে স্বামীসহ ছয় শহীদ সন্তানের জননীর স্টেচারে ভিক্ষাঃ


www.koborki.blodspot.com


আরিফ চৌধুরী শুভ।।


মুক্তিযোদ্ধা স্বামী ও ৬ শহীদ সন্তানের জননী মেহেরজান বিবি। দেশ স্বাধীনের পূর্বে ছিলেন মিরপুর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। কিন্তু সহায় সম্বলহীন মেহেরজারেন ঠাঁই এখন ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর আবাসন ও আশ্রয়ন প্রকল্পের ৩ নং ব্যারাকের ১১ নং কক্ষে। বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে দুই বোগলে স্টেচারে ভর দিয়ে ভিক্ষা করেন এ বাড়ি ওবাড়ি। জীবনের এ প্রান্তে এসে আক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেহেরজান বিবির প্রশ্ন, বঙ্গবন্ধু আমার খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি উপেক্ষিত। এটাই কি আমার ভাগ্যে লেখা ছিল?


স্বাধীনতার পর তাঁর দুঃখ-কষ্টের কথা পত্রিকায় ছাপা হলে বঙ্গবন্ধু তাঁকে ও তাঁর এক পুত্রবধূ করফুলের নেছাকে ডেকে নিয়ে দুই হাজার টাকা করে অনুদান দেন এবং মেহেরজান বিবিকে হজ্ব পালন করান। কিন্তু এখন আর কেউ খবর রাখে না।



মেহেরজান বিবি’র ভাষ্য মতে, তাঁর ৮ পুত্র ও ২ মেয়ে ছিল। দুই মেয়ে মরিয়ম বিবি ও হাসনা বিবিও মারা গেছেন। তাঁর ছয় পুত্র এবং স্বামী এ টি এম সামসুদ্দিন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হন। তাঁর শহীদ ছেলেরা হলেন- ছায়েদুল হক (তৎসময়ে সিলেটে রিলিফ অফিসার পদে কর্মরত), দেলোয়ার হোসেন, বেলায়েত হোসেন, খোয়াজ নবী, নুরের জামান ও আবুল কালাম। বাকী দু’পুত্র শাহ আলম ও শাহ জাহানের সন্ধান জানেন না তিনি।


মেহেরজান বিবি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে তিনি ঢাকার মিরপুরে বাংলা মিডিয়াম হাই স্কুল (বর্তমানে মিরপুর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়) এর শিক্ষিকা ছিলেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী তাঁর স্বামী ও ৬ সন্তানকে হত্যা করে খ্যান্ত হয়নি।  মুক্তিযোদ্ধা পরিবার জানতে পেরে মিরপুরে তাঁদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়।


বয়সের ভারে ন্যুজ্ব ৮৮ বছর বয়স্কা অসহায় মেহেরজান বিবি প্রতিদিন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করেন। তাঁর দুঃখে ভারাক্রান্ত জীবন কাহিনী বলতে বলতে অঝোরে চোখ বেয়ে নেমে আসে বেদনার অশ্রু। নিজে কাঁদেন এবং কাঁদান অন্যকেও।  এই বয়সে দুই বগলে স্টেচারে ভর দিয়ে গ্রামে দু’মুঠো ভিক্ষার জন্য ঘুরে বেড়ান মেহেরজান। চরম অসহায়ত্বের মাঝে দিন কাটছে তাঁর।


স্বাধীনতা যুদ্ধের পর স্বামী সন্তানদের শহীদ হওয়ার খবরে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিনেও তাঁর পুরাপুরি মানসিক সুস্থতা ফিরে আসেনি।  স্বজনদের হারিয়ে চরম অসহায়ত্বে পড়ে ভিক্ষাভিত্তির পথ বেছে নেন তিনি।


২০০৯ সালে ফেনী রেল স্টেশনে ভিক্ষা করতে দেখে জনৈক জিআরপি পুলিশ তাঁকে ফেনী জেলা প্রশাসনে পাঠায়।  তখন জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁকে পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হয় ধর্মপুর আবাসন প্রকল্পে।  সেই থেকে তিনি এখানে বসবাস করছেন।


পৈতৃক নিবাস চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুর হাটস্থ ২৬ নং দক্ষিণ তরপুর চন্ডী গ্রামে ১০ অক্টোবর  ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেন মেহেরজান বিবি। বাবা ইব্রাহীম উকিল, মা বিবি হনুফা।  তারা ছিলেন  ৬ ভাই বোন। সোনাগাজী উপজেলার ৬নং চরছান্দিয়া ইউনিয়নের বড়ধলী হাজী বাড়ির মরহুম মমতাজ উদ্দিনের ছেলে সুবেদার মেজর এ টি এম সামসুদ্দিনের সাথে মেহেরজান বিবির বিয়ে হয়। পঞ্চাশের দশকে বড়ধলী গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হলে নিঃস্ব হয়ে তারা শহরে চলে আসেন। বাসা ভাড়া করেন ঢাকার মিরপুর ১ নাম্বারে জালাল দারগার বাড়িতে।


সোনাগাজী উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ নাসির উদ্দিন জানান, মেহেরজান বিবি সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে, তবে কোন কাজ হয়নি। তাঁর স্বামী-সন্তান যে শহীদ হয়েছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।  আমি গেজেটে তাঁর নামও দেখেছি।


মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ফেনী জেলা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রহমান মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন থেকে মেহেরজান বিবির সাথে আমার সম্পর্ক।  তিনি আমাকে খুব স্নেহ করেন এবং ছেলে ডাকেন।


ফেনীর জেলা প্রসাশক মনোজ কুমার রায় বলেন, আশ্রায়ন প্রকল্পে সুবিধা ভোগীর একজন মেহেরজান। আমরা তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ছয় সন্তান ও স্বামী হারিয়েছেন। এই ছাড়া তাঁর অনেক করুন কাহিনী শুনেছি। তাঁর জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১৮

‘মানব সৃষ্টির রহস্য" স্মরণ কর সেই সময়ের কথা, যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদের বললেন, আমি মিশ্রিত পচা কাদার শুকনো মাটি দিয়ে ‘মানুষ’ সৃষ্টি করব। অতঃপর যখন আমি তার অবয়ব পূর্ণভাবে তৈরী করে ফেলব ও তাতে আমি আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদায় পড়ে যাবে’ (হিজর ১৫//


মানব সৃষ্টির রহস্য :

আল্লাহ বলেন, وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّيْ خَالِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُوْنٍ، فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيْهِ مِن رُّوحِيْ فَقَعُوْا لَهُ سَاجِدِيْنَ- ‘স্মরণ কর সেই সময়ের কথা, যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদের বললেন, আমি মিশ্রিত পচা কাদার শুকনো মাটি দিয়ে ‘মানুষ’ সৃষ্টি করব। অতঃপর যখন আমি তার অবয়ব পূর্ণভাবে তৈরী করে ফেলব ও তাতে আমি আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদায় পড়ে যাবে’ (হিজর ১৫/২৮-২৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, هُوَ الَّذِيْ يُصَوِّرُكُمْ فِي الأَرْحَامِ كَيْفَ يَشَآءُ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ- (آل عمران ৬)- ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে মাতৃগর্ভে আকার-আকৃতি দান করেছেন যেমন তিনি চেয়েছেন। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি মহা পরাক্রান্ত ও মহা বিজ্ঞানী’ (আলে ইমরান ৩/৬)। তিনি আরও বলেন, يَخْلُقُكُمْ فِيْ بُطُوْنِ أُمَّهَاتِكُمْ خَلْقًا مِّن بَعْدِ خَلْقٍ فِي ظُلُمَاتٍ ثَلاَثٍ- (زمر ৬)- ‘তিনি তোমাদেরকে তোমাদের মাতৃগর্ভে সৃষ্টি করেন একের পর এক স্তরে তিনটি অন্ধকারাচ্ছন্ন আবরণের মধ্যে’(যুমার ৩৯/৬)। তিনটি আবরণ হ’ল- পেট, রেহেম বা জরায়ু এবং জরায়ুর ফুল বা গর্ভাধার।

উপরোক্ত আয়াতগুলিতে আদম সৃষ্টির তিনটি পর্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমে মাটি দ্বারা অবয়ব নির্মাণ, অতঃপর তার আকার-আকৃতি গঠন ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমূহে শক্তির আনুপতিক হার নির্ধারণ ও পরস্পরের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান এবং সবশেষে তাতে রূহ সঞ্চার করে আদমকে অস্তিত্ব দান। অতঃপর আদমের অবয়ব (পাঁজর) থেকে কিছু অংশ নিয়ে তার জোড়া বা স্ত্রী সৃষ্টি করা। সৃষ্টির সূচনা পর্বের এই কাজগুলি আল্লাহ সরাসরি নিজ হাতে করেছেন (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)। অতঃপর এই পুরুষ ও নারী স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বসবাস করে প্রথম যে যমজ সন্তান জন্ম দেয়, তারাই হ’ল মানুষের মাধ্যমে সৃষ্ট পৃথিবীর প্রথম মানব যুগল। তারপর থেকে এযাবত স্বামী-স্ত্রীর মিলনে মানুষের বংশ বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

শুধু মানুষ নয়, উদ্ভিদরাজি, জীবজন্তু ও প্রাণীকুলের সৃষ্টি হয়েছে মাটি থেকে। আর মাটি সৃষ্টি হয়েছে পানি থেকে। পানিই হ’ল সকল জীবন্ত বস্ত্তর মূল (ফুরক্বান ২৫/৫৪)

মৃত্তিকাজাত সকল প্রাণীর জীবনের প্রথম ও মূল একক (Unit) হচ্ছে ‘প্রোটোপ্লাজম’ (Protoplasm)। যাকে বলা হয় ‘আদি প্রাণসত্তা’। এ থেকেই সকল প্রাণী সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য বিজ্ঞানী মরিস বুকাইলী একে Bomb shell বলে অভিহিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে মাটির সকল প্রকারের রাসায়নিক উপাদান। মানুষের জীবন বীজে প্রচুর পরিমাণে চারটি উপাদান পাওয়া যায়। অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ও হাইড্রোজেন। আর আটটি পাওয়া যায় সাধারণভাবে সমপরিমাণে। সেগুলি হ’ল- ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ক্লোরিন, সালফার ও আয়রণ। আরও আটটি পদার্থ পাওয়া যায় স্বল্প পরিমাণে। তাহ’ল: সিলিকন, মোলিবডেনাম, ফ্লুরাইন, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, আয়োডিন, কপার ও যিংক। কিন্তু এই সব উপাদান সংমিশ্রিত করে জীবনের কণা তথা ‘প্রোটোপ্লাজম’ তৈরী করা সম্ভব নয়। জনৈক বিজ্ঞানী দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এসব মৌল উপাদান সংমিশ্রিত করতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন এবং তাতে কোন জীবনের ‘কণা’ পরিলক্ষিত হয়নি। এই সংমিশ্রণ ও তাতে জীবন সঞ্চার আল্লাহ ব্যতীত কারু পক্ষে সম্ভব নয়। বিজ্ঞান এক্ষেত্রে মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে মাটি থেকে সরাসরি আদমকে অতঃপর আদম থেকে তার স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করার পরবর্তী পর্যায়ে আল্লাহ আদম সন্তানদের মাধ্যমে বনু আদমের বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। এখানেও রয়েছে সাতটি স্তর। যেমন: মৃত্তিকার সারাংশ তথা প্রোটোপ্লাজম, বীর্য বা শুক্রকীট, জমাট রক্ত, মাংসপিন্ড, অস্থিমজ্জা, অস্থি পরিবেষ্টনকারী মাংস এবং সবশেষে রূহ সঞ্চারণ(মুমিনূন ২৩/১২-১৪; মুমিন ৪০/৬৭; ফুরক্বান ২৫/৪৪; তারেক্ব ৮৬/৫-৭)। স্বামীর শুক্রকীট স্ত্রীর জরায়ুতে রক্ষিত ডিম্বকোষে প্রবেশ করার পর উভয়ের সংমিশ্রিত বীর্যে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে(দাহর ৭৬/২)। উল্লেখ্য যে, পুরুষের একবার নির্গত লম্ফমান বীর্যে লক্ষ-কোটি শুক্রাণু থাকে। আল্লাহর হুকুমে তন্মধ্যকার একটি মাত্র শুক্রকীট স্ত্রীর জরায়ুতে প্রবেশ করে। এই শুক্রকীট পুরুষ ক্রোমোজম Y অথবা স্ত্রী ক্রোমোজম X হয়ে থাকে। এর মধ্যে যেটি স্ত্রীর ডিম্বের X ক্রোমোজমের সাথে মিলিত হয়, সেভাবেই পুত্র বা কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে আল্লাহর হুকুমে।

মাতৃগর্ভের তিন তিনটি গাঢ় অন্ধকার পর্দার অন্তরালে এইভাবে দীর্ঘ নয় মাস ধরে বেড়ে ওঠা প্রথমত: একটি পূর্ণ জীবন সত্তার সৃষ্টি, অতঃপর একটি জীবন্ত প্রাণবন্ত ও প্রতিভাবান শিশু হিসাবে দুনিয়াতে ভূমিষ্ট হওয়া কতই না বিষ্ময়কর ব্যাপার। কোন মানুষের পক্ষে এই অনন্য-অকল্পনীয় সৃষ্টিকর্ম আদৌ সম্ভব কী? মাতৃগর্ভের ঐ অন্ধকার গৃহে মানবশিশু সৃষ্টির সেই মহান কারিগর কে? কে সেই মহান আর্কিটেক্ট, যিনি ঐ গোপন কুঠরীতে পিতার ২৩টি ক্রোমোজম ও মাতার ২৩টি ক্রোমোজম একত্রিত করে সংমিশ্রিত বীর্য প্রস্ত্তত করেন? কে সেই মহান শিল্পী, যিনি রক্তপিন্ড আকারের জীবন টুকরাটিকে মাতৃগর্ভে পুষ্ট করেন? অতঃপর ১২০ দিন পরে তাতে রূহ সঞ্চার করে তাকে জীবন্ত মানব শিশুতে পরিণত করেন এবং পূর্ণ-পরিণত হওয়ার পরে সেখান থেকে বাইরে ঠেলে দেন (আবাসা ৮০/১৮-২০)। বাপ-মায়ের স্বপ্নের ফসল হিসাবে নয়নের পুত্তলি হিসাবে? মায়ের গর্ভে মানুষ তৈরীর সেই বিষ্ময়কর যন্ত্রের দক্ষ কারিগর ও সেই মহান শিল্পী আর কেউ নন, তিনি আল্লাহ! সুবহানাল্লাহি ওয়া বেহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম!!

পুরুষ ও নারীর সংমিশ্রিত বীর্যে সন্তান জন্ম লাভের তথ্য কুরআনই সর্বপ্রথম উপস্থাপন করেছে (দাহর ৭৬/২)। আধুনিক বিজ্ঞান এ তথ্য জনতে পেরেছে মাত্র গত শতাব্দীতে ১৮৭৫ সালে ও ১৯১২ সালে। তার পূর্বে এরিষ্টটল সহ সকল বিজ্ঞানীর ধারণা ছিল যে, পুরুষের বীর্যের কোন কার্যকারিতা নেই। রাসূলের হাদীছ বিজ্ঞানীদের এই মতকে সম্পূর্ণ বাতিল ঘোষণা করেছে।[15]কেননা সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সন্তান প্রজননে পুরুষ ও নারী উভয়ের বীর্য সমানভাবে কার্যকর।

উল্লেখ্য যে, মাতৃগর্ভে বীর্য প্রথম ৬ দিন কেবল বুদ্বুদ আকারে থাকে। তারপর জরায়ুতে সম্পর্কিত হয়। তিন মাসের আগে ছেলে বা মেয়ে সন্তান চিহ্নিত হয় না। চার মাস পর রূহ সঞ্চারিত হয়ে বাচ্চা নড়েচড়ে ওঠে ও আঙ্গুল চুষতে থাকে। যাতে ভূমিষ্ট হওয়ার পরে মায়ের স্তন চুষতে অসুবিধা না হয়। এ সময় তার কপালে চারটি বস্ত্ত লিখে দেওয়া হয়। তার আজাল (হায়াত), আমল, রিযিক এবং সে ভাগ্যবান না দুর্ভাগা।[16]

এভাবেই জগত সংসারে মানববংশ বৃদ্ধির ধারা এগিয়ে চলেছে। এ নিয়মের ব্যতিক্রম নেই কেবল আল্লাহর হুকুম ব্যতীত। একারণেই আল্লাহ অহংকারী মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মানুষ কি দেখে না যে, আমরা তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু থেকে? অতঃপর সে হয়ে গেল প্রকাশ্যে বিতন্ডাকারী’। ‘সে আমাদের সম্পর্কে নানারূপ দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে। অথচ সে নিজের সৃষ্টি সম্পর্কে ভুলে যায়, আর বলে যে, কে জীবিত করবে এসব হাড়গোড় সমূহকে, যখন সেগুলো পচে গলে যাবে? (ইয়াসীন ৩৬/৭৭-৭৮)

মহানবী (সা.) কে দেখে একটি উট যে কারণে কেঁদেছিলো!


মহানবী (সা.) কে দেখে একটি উট যে কারণে কেঁদেছিলো!


www.koborki.blogspot.com

মহানবী (সা.) কে দেখে একটি উট যে কারণে কেঁদেছিলো – আবূ জাফর আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সওয়ারীর উপর তাঁর পিছনে বসালেন এবং আমাকে তিনি একটি গোপন কথা বললেন, যা আমি কাউকে বলব না।


আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঁচু জায়গা (দেওয়াল, ঢিবি ইত্যাদি) অথবা খেজুরের বাগানের আড়ালে মল-মূত্র ত্যাগ করা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন।’ (ইমাম মুসলিম এটিকে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন)


বারক্বানী এতে মুসলিমের সূত্রে বর্ধিত আকারে খেজুরের বাগান’ শব্দের পর বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারীর বাগানে প্রবেশ করে সেখানে একটা উট দেখতে পেলেন। উটটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল এবং তার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল।


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে এসে তার কুঁজে এবং কানের পিছনের অংশে হাত ফিরালেন, ফলে সে শান্ত হল। তারপর তিনি বললেন, এই উটের মালিক কে? এই উটটা কার?’’ অতঃপর আনসারদের এক যুবক এসে বলল, এটা আমার হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বললেন, তুমি কি এই পশুটার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো না, আল্লাহ তোমাকে যার মালিক বানিয়েছেন? কারণ, সে আমার নিকট অভিযোগ করছে যে, তুমি তাকে ক্ষুধায় রাখ এবং (বেশি কাজ নিয়ে) ক্লান্ত করে ফেলো!’’[মুসলিম ৩৪২, ২৪২৯, আবু দাউদ ২৫৪৯, ইবন মাজাহ ২৪০, আহমদ ১৭৪৭, দারেমি ৬৬৩, ৭৫৫]


 


 


মহানবী (সা.) ঘুমানোর আগে যা করতেন


আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিটি কাজ তাঁর আদর্শ এবং রেখে যাওয়া পথ-পদ্ধতি সম্পর্কে একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই জ্ঞ্যান থাকাটা খুব জরুরি। ঘুম বান্দার প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত এক বিরাট নেয়ামত । সেই নেয়ামতের শোকর তখনই হবে, যখন আমরা আল্লাহর নেয়ামতকে রাসুলের (সা.) এর সুন্নাত মোতাবেক পালন করবো । এতে একদিকে আমাদের আমলের সাওয়াব লাভ হবে, নেয়মাতের শোকার আদায় হবে, একই সাথে আল্লাহ রাসুলের (সা.) এর নির্দেশনায় যে কল্যাণ রয়েছে, তা থেকেও বঞ্চিত হবো না ।


হাদিসে বর্ণিত ঘুমানোর আগে যে-সব সুন্নাত রয়েছে, তা হলো-


১. ভালোভাবে বিছানা ঝেড়ে নেয়া।

২. ঘরের দরজা আল্লাহর নামে বন্ধ করে ঘুমানো।

৩. ঘুমের সময় ঘুমের দোয়া পাঠ করা। হাদিসে বর্ণিত ঘুমের দোয়া হলো, ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ আপনার নামে আমরা মৃত্যুবরণ করি আবার আপনার নামেই জীবিত হই। কেননা, ঘুমকে বলা হয় মৃত্যুর ভাই । মানুষ যখন ঘুমে যায়, তখন তার রুহ আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়। এরপর তার জাগরণের পূর্বে রুহ আবার তার দেহে ফিরিয়ে দেয়া হয়। (বুখারি)




৪. ডান কাত হয়ে শোয়া। অর্থাৎ ঘুমের শুরুটা যেনো ডান কাতে হয়। এরপর ঘুমের ঘোরে অন্য যে কোনোভাবে ঘুমালেও সুন্নাত পরিপন্থী হবে না।

৫. অপবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে হলে শরীরের বাহ্যিক অপবিত্রতা ধুয়ে অযু করে ঘুমানো ।



৬. নগ্ন হয়ে না ঘুমানো । (বুখারি)

৭. একান্ত প্রয়োজন না হলে উপুড় হয়ে না ঘুমানো সুন্নাত ।


৮. ঘুমানোর সময় আগুন জ্বালানো বাতি নিভিয়ে ঘুমানো । (তিরমিযি)

৯. ঘুম ঘোরে দুঃস্বপ্ন দেখলে পার্শ্ব পরিবর্তন করে শোয়া ।

১০. দুঃস্বপ্ন দেখলে বাম দিকে তিনবার থুথু ছিটানো এবং দোয়া করা, ‘হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট দুঃস্বপ্ন ও শয়তান থেকে পানাহ চাই ।’ এভাবে তিনবার বলা । তবে দুঃস্বপ্ন কাউকে না বলা সুন্নাত। (মুসলিম)